আন্তর্জাতিক

ইতালি করোনমুক্ত হতে শুরু করেছে

By Daily Satkhira

June 02, 2020

বিদেশের খবর: প্রাণঘাতী ভাইরাসে বিধ্বস্ত ইতালি করোনামুক্ত হওয়া শুরু করেছে। দেশটির বৃহত্তর দীপাঞ্চল সিসিলিয়া’র ত্রিপানি শহরটি এরই মধ্যে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছে সরকার। গত ৩৩ দিনে এ শহরের কোন নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়নি।

এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশটির ৬টি বিভাগীয় শহরে করোনায় নতুন সংক্রমণ হয়নি। বিপরীতে রাজধানী রোমসহ দেশের সবকটি বিভাগীয় অঞ্চলে নতুন সংক্রমনের হার কমেছে। সবচেয়ে সংক্রমিত এলাকা লোম্বার্দিয়ায় একদিনে সর্বনিম্ন সংখ্যক ৫০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। অপরদিকে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে করোনা নিয়ে আতঙ্কের বিপরীতে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে ইতালীর নাগরিকদের মাঝে।

ইতালির নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় কমবেশি সব শহরেই কমেছে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা। এ সময়ে নতুন করে সর্বনিম্ন সংক্রমিত হয়েছেন ২০০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬০ জনের। দেশটির সবচেয়ে সংক্রমিত অঞ্চল লোম্বার্দিয়ায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫০ জন, যেখানে আগের দিন ছিল ২১৬ জন।

প্রথম শহর হিসেবে ‘ত্রিপানি’ অঞ্চলকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেছে ইতালি সরকার। পশ্চিম ইতালির সিসিলিয়া বিভাগীয় অঞ্চলে অবস্থিত ‘ত্রিপানি’ শহরের লোকসংখ্যা প্রায় ৬৯ হাজার। গত ৩৩ দিনে এ শহরে নতুন করে কোন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়নি। এর আগে শহরটিতে সবমিলিয়ে ১৪০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সকলেই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।

সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত একদিনে দেশটির ৬টি বিভাগয়ী শহরে নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। নতুন করে সংক্রমিত হয়নি এমন একটি বিভাগীয় শহর ‘মার্কে’। যেখানে এর আগে ৬ হাজার ৭৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল এবং প্রাণ গেছে ৯৮৭ জনের। আরেকটি বিভাগয়ী শহর যেখানে ‘সিসিলিয়া’ যেখানে ইতোমধ্যে প্রাণ গেছে ২৬৪ জনের এবং করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৪৩ জন।

এভাবে ‘উমব্রিয়া, কালাব্রিয়া, মলিসে এবং বাসিলিকাতা অঞ্চলে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে কেউ করোনায় সংক্রমিত হয়নি। নতুন সংক্রমিত হয়েছেন এমন অন্যান্য বিভাগীয় অঞ্চলগুলোর মধ্যে লোম্বার্দিয়ায় ৫০ জন, পিয়েমন্তে ২১ জন, এমিলিয়া রোমানিয়ায় ১৯ জন, ভেনেতো’তে ২ জন, তোসকানায় ৩ জন, লিগুরিয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৫৬ জন, রাজধানী রোমসহ লাছিওতে ১০ জন, কাম্পানিয়া এবং পুলিয়ায় ৪ জন করে, ভাল্লে দি অস্তে ৩ জন, ত্রেনতো’তে ২ জন এবং ফ্রিউল্লি, আবরুচ্ছো, বোলযানো ও সার্দেনিয়া বিভাগীয় অঞ্চলে ১ জন করে।

দেশটিতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে শুরু হয় করোনার হানা। গত ২৭ মার্চ একদিনে সর্বোচ্চ ৯৬৯ জন করোনায় প্রাণ হারায়। ইতালি সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা গ্রহণ করে। ইউরোপে সর্বোচ্চ ৫৭ দিন লকডাউনের পর গত ৪ মে প্রথম দফায় এবং ১৮ মে থেকে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন শিথিল করা হয়। ১লা জুন থেকে দেশটির সকল বার এবং রেস্টুরেস্ট ব্যবসা আগের ন্যায় স্বাভাবিকভাবে চালু হয়েছে। আগামী ৩ জুন থেকে ইতালির সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে এবং নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে দেশটির ৬ কোটির বেশি নাগরিক করোনার প্রকোপের আগের স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন মাত্র একদিন পর থেকেই। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ভ্রমণ করতে পারবে দেশটির নাগরিকরা।

ইতালিতে এ পর্যন্ত ৩৯ লাখ ১০ হাজার ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৯৭ জনের এবং প্রাণ গেছে ৩৩ হাজার ৪৭৫ জনের। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৫ জন। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন হাসপাতাল এবং বাসায় চিকিৎসাধীন আছেন ৪১ হাজার ৩৬৭ জন।