অনলাইন ডেস্ক : সদ্য প্রয়াত সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমকে নিয়ে ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে কটূক্তি করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বাংলা বিভাগের সেই শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় শনিবার রাত ১২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি (তদন্ত) রবিউল ইসলাম।
ওসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলায় শিক্ষক সিরাজুম মুনিরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা নম্বর-৮। তবে গ্রেপ্তার করে কোথায় রাখা হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি। রবিউল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বলা যাচ্ছে না, তবে পুলিশ হেফাজতে আছেন। শনিবার লাইফ সাপোর্টে থাকা আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মারা যান। পরে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক সিরাজুম মনিরা ফেসবুকে ব্যঙ্গ করে ‘যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হল’শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার এই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হলে গেলে পরে তা মুছে (ডিলিট) দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে ওই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও সরকারি অঙ্গসংগঠনের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
পরে রাতেই ওই শিক্ষিকা ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘একজন সিনিয়র সিটিজেন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্নভাবে অভিমত ব্যক্ত করা ঠিক নয়। কর্মফল যাই হোক না কেন মৃত্যুর সব সময় বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক। এটি অনুধাবনের পরপরই আমি আমার বক্তব্য থেকে সরে এসেছি। এবং আমার পূর্বের দেয়া পোস্টটি সরিয়ে দিয়েছি। তারপরেও যারা আঘাত পেয়েছেন, তাদের কাছে আমি আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী’।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও সরকারি অঙ্গসংগঠনের নেতারা বলছেন, এটি ক্ষমার অযোগ্য। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, এ ঘটনার পরপরই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া মামলা করার উদ্যোগ নেয়। রাতে তিনি মামলার এজাহার লিখে থানায় জমা দেয়ার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে প্রশাসনের মামলা করার উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এর দায় এড়াতে পারে না। শুধু গ্রেপ্তার করলেই হবে না। তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে। এ সময় পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুহিব্বুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকা বর্তমানে থানায় রয়েছে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।