সূর্য এবং আমি
-শেখ মফিজুর রহমান
সূর্য যখন রক্তিম হয় ঠিক ডুবে যাওয়ার পূর্বে কী এক স্বর্গীয় পরিবেশ, নৈঃশব্দ্য রক্তিম সুর্যকে বিদায় জানায় ঘরে ফেরা পাখি, দখিনা বাতাস বাড়ি ফেরা শিশু, মাগরিবের আযান। ঠিক সেই মুহূর্তে বড় ঈর্ষা জাগে অস্তমিত সূর্যের প্রতি নিত্য সকালে সে আসে, পূর্ণ জ্যোতির্ময় রূপে তবুও তার নিত্য বিদায়ের মুহুর্তও কত মোহনীয় কিন্তু আমি জানি না – আমার বিদায়ের মুহূর্ত কখন আমি জানি না বিদায় জানাতে আমার পাশে কেউ থাকবে কি না! কতটুকু প্রস্তুতি আমার সেই চির বিদায়ের? সূর্য যতই হোক অস্তমিত পরদিন ঠিকই আসবে ফিরে সে মেঘ ভেঙে হোক ঝড় বৃষ্টির ঝঞ্জা বিক্ষুব্ধ পথ পেরিয়ে হোক সূর্য উঠবেই নতুন দিনের নতুন আশা নিয়ে। কিন্তু আমি? আমি চলে গেলে তো আর ফিরে আসবো না! স্বজনের চোখের জল, হাজারো লোকের শোক কিছুতেই পারবে না আমাকে ফেরাতে আমার অর্পিত অসম্পূর্ণ দায়িত্ব সম্পূর্ণ করাতে আমার কথায় ও কাজে যে হৃদয় পেয়েছে ব্যথা কখনোই পারবো না সেখানে সান্ত্বনার পরশ বুলাতে! একটি জীবনে একবারই বাঁচা, একবারই মরা একবার চলে গেলে আর হবে না ফেরা ! তবে কেন এতো স্বার্থের ক্ষুদ্রতা? সময় ও সম্পর্কের প্রতি অবহেলা? দায়িত্ব ভুলে থাকা? সূর্য উঠবে, আমি উঠবো না! যে জীবন যাবে চলে তা আর ফিরে তো পাবো না! কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে চাই – কিছু ভালো কাজের মাঝে মানুষের মনের ভালোবাসায় প্রকৃতির বিশুদ্ধতায় ফিরে আসতে না পারি সূর্যের মতো স্বশরীরে কিন্তু মানুষের মনের কোণে আমার জন্য জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ভালোবাসায় আমার কিছুটা অস্তিত্ব অবগাহন করে জীবিত থাকুক পৃথিবীর শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।
লেখক: জেলা ও দায়রা জজ, সাতক্ষীরা।