ডেস্ক রিপোর্ট : শফিকুল(ছদ্মনাম)। সাতক্ষীরা শহরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭ বছর ধরে কাজ করেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় ৩ মাস তার প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ আছে। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সীমিত আকারে কার্যক্রম শুরু হলেও শফিকুলের প্রতিষ্ঠানটি এখনও খোলেনি। তার পরিবারে স্ত্রী-২ সন্তান ও বৃদ্ধা মাসহ ৫ জন সদস্য। শহরের একটি এক রুমের ভাড়া বড়িতে তাদের বসবাস। ১২৫০ টাকা বাসা ভাড়া। শফিকুলের ৯ হাজার টাকার বেতনে কোনরকমে সংসার চলে যেত। কিন্তু এখন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেতনও প্রায় বন্ধ। সামান্য জমানো টাকা দিয়ে কোনরকমে দিন চলছিল তার। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে তার পক্ষে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা এই পরিস্থিতিতে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন গ্রামে ফিরে যাওয়া ছাড়া শফিকুলের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই।
সাতক্ষীরার বাজারে কাঁচা তরিতরকারি ও শাক-সবজির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কাঁচা মরিচের দাম আজ ৮০ টাকা তো কাল ১২০ টাকা তো পরশু ১৫০ টাকা কেজি! অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণের কোন উদ্যোগ নেই। অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় শাক-সবজি কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এ যেন করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া স্বল্প আয়ের মানুষের জীবনে মড়ার উপর খড়ার ঘা। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের দাম শতকরা ৩০০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কাঁচা মরিচ বছরের এই সময়ে ১০/১২ টাকা কেজি বিক্রি হত বৃষ্টিসহ নানা অজুহাতে তা এখন ১৫০ টাকায় পৌঁছে গেছে। বেগুনের কেজি বাজার ভেদে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, পেঁপের কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়শের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পটলের কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আলু ২৮ টাকা কেজি, উচ্ছের কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। এছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় শাক-সবজির বাজার দামও অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।
কাঁচা তরকারির বাজারদরের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে সাতক্ষীরা শহর কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী বলেন, এবার সাইক্লোন আম্পান ও অতিবৃষ্টির কারণে বহু কাঁচা তরকারি ও ফসলের ক্ষেত পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। দেশের যেসকল জায়গা থেকে কাঁচা মরিচ আসত সেখানেও বৃষ্টিতে গাছ মরে গেছে। এসকল কারণে বাজারে সবজির সঙ্কট তৈরি হয়েছে এবং দামও বেশি। তিনি সরকারের কাছে আহ্বান জানান প্রকৃত কৃষকদের পাশে দাাঁড়ানোর জন্য।