অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার জন্য সরকারিভাবে ফি নির্ধারণ করে দেয়া হচ্ছে। যা এখন বিনামূল্যে করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। তবে ফি কত নির্ধারিত হচ্ছে- তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি সূত্রটি।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষা করে আসছে। যদিও সেই টেস্টের পরিমাণ প্রথম দিকে খুব সীমিত ছিল। তবে এখন টেস্টের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে ৬৬টি সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ১৫ থেকে ২০ হাজারের মতো প্রতিদিন টেস্ট হচ্ছে। ২৬ জুন পর্যন্ত সারাদেশের ল্যাবরেটরিতে ছয় লাখ ৯৬ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মোট নমুনা পরীক্ষার সিংহভাগই হয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরকারি প্রতিষ্ঠানে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে নমুনা পরীক্ষার জন্য তিন হাজার ৫০০ টাকা ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ফি ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে ব্যয়বহুল এ পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করার ফলে পরীক্ষাটির অনেক অপব্যবহার হচ্ছে। এই অপব্যবহার রোধে একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রের ভাষ্য, এখন টেস্ট দিন দিন বাড়ছে। ফলে প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। সেজন্য সামান্য ফি নির্ধারণ করার একটা চিন্তা-ভাবনা চলছে। ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত খসড়া তৈরি হয়েছে। হিসাব-নিকাশ শেষে খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং ঘোষণা দেয়া হবে। তবে ফি সীমিতই নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
সেই সীমিত ফি কত হতে পারে? জানতে চাইলে সূত্রটি বলে, সরকারি হাসপাতালের লাইনে দাঁড়ানো রোগী কিংবা ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য এবং সরকারি বুথগুলোতে ২০০ টাকা ফি দিতে হতে পারে। আর যদি কেউ বাসা থেকে টেস্ট করাতে চান, তাহলে তাকে ৫০০ টাকা ফি দিতে হতে পারে। এমন একটা খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এটা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এটা আলোচনা হয়েছিল, এখনও কিছু ফাইনাল হয় নাই। সরকারের তো অনেক খরচ হচ্ছে, ধরেন একটা টেস্ট করতে বেসরকারিভাবে আমরা বেঁধে দিয়েছি তিন হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু আসলে ল্যাব বসানোর খরচ, যন্ত্রপাতির খরচ এগুলো যদি ধরা হয় আরও বেশি পড়ে সেক্ষেত্রে। এখন তো টেস্টের সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজারের কাছে চলে গিয়েছে, প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হয়। সেজন্য সামান্য ফি ধরার একটা চিন্তা হচ্ছে। হিসাব-নিকাশ হচ্ছে, মিনিমাম কতটুকু কী করা যায়। ফাইনাল হলে নিশ্চয়ই জানতে পারবেন, অফিসিয়ালি আমরা ঘোষণা করে দেবো, বেশি দেরি হবে না, খুব তাড়াতাড়িই হবে।’
ফি কত হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা খুবই অল্প ফিগার ধরা হবে, বেশি না। এ নিয়ে কাজ চলছে, সবকিছু মিলে গেলে আমরা নির্ধারণ করে দেবো।’ প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হন ৮ মার্চ এবং এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। এরপর থেকেই দেশে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। সর্বশেষ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১ হাজার ৬৯৫ জন করোনা রোগী মারা গেলেন। এই সময়ে ৩ হাজার ৫০৪ জন নতুন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১৮৫ জন এবং মোট সুস্থ ৫৪ হাজার ৩১৮ জন।