ফিচার

পেশাগত নৈতিকতা লঙ্ঘন ; অ্যাড. আকবরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা জজ

By Daily Satkhira

July 03, 2020

আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরায় পেশাগত নৈতিকতা লঙ্ঘন করায় সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির কোষাধ্যক্ষ অ্যাড. আকবর আলীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। অনৈতিকতার বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্সের কারণে আকবর আলীর সদস্যপদ বাতিল করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডঃ এম, শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সহসভাপতি এ্যাডঃ গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, যুগ্ম-সম্পাদক এ্যাডঃ মোস্তফা জামানসহ সকল কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইনজীবী সমিতির সদস্য ও বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এ্যাডঃ মোঃ আকবর আলী মামলা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে পেশাগত নৈতিকতা লঙ্ঘন করায় তার সদস্যপদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ পদ শুন্য ঘোষণা করা হয়। অনতিবিলম্বে উক্ত কোষাধ্যক্ষ পদে পুনঃনির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়। তারা জানান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নিয়মাবলী অনুযায়ী একজন আইনজীবী একটি মামলায় বাদী ও আসামী উভয়পক্ষে ওকালতি করতে পারবেন না। কিন্তু এ্যাডঃ আকবর আলী সাতক্ষীরা নারী ও শিশু আদালতের একটি মামলায় ( যার নং-৬২/২০২০) একদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী অপরদিকে একই আইনজীবী একই মামলায় আসামী পক্ষেরও আইনজীবী হয়ে তিনি আসামীর জামিন আবেদন করে জামিন লাভ করে জামিননামা সম্পাদন করেছেন। বিষয়টি সাতক্ষীরা বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান সাহেবের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে ৭ জুন শো-কজ করেন। বিজ্ঞ আইনজীবী লিখিত জবাবে ৯ জুন জানান বাদী পক্ষের স্বাক্ষর তার নহে। একই জবাবে আইনজীবী তার কৃতকর্ম ও ভুলের জন্য ক্ষমাও চান। বিষয়টি সুস্পষ্ট করার জন্য এবং বাদী পক্ষের স্বাক্ষর আইনজীবীর কিনা এবিষয়ে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাহেবকে তদন্তের নির্দেশ দেন। কার্যনির্বাহী কমিটি ম্যাজিষ্ট্রেট কোট, জজ কোর্ট, নারী শিশু কোর্টসহ অন্যান্য আদালতের ১৫টি মামলা নথি, হাজিরা, জামিনের আবেদন ও জামিননামা পরীক্ষা নিরীক্ষা অন্তে ওই আইনজীবীর স্বাক্ষর ও সীল পর্যালোচনা করে লিখিত ভাবে তদন্ত রিপোর্টে জানান যে, আইনজীবী তার জবাবে মিথ্যা কথা বলেছেন। সুতরাং উক্ত আইনজীবী সত্য গোপন করে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা জবাব দাখিল করেছেন। আইনজীবী সমিতির তদন্ত রিপোর্টদৃষ্টে উক্ত আইনজীবী পারফেক্ট ল প্রাকটিসের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং নিজ স্বার্থ হাসিলের ও আর্থিক লাভবানের জন্য আইনের অপপ্রয়োগ করিয়া সৃষ্ঠ বিচার কার্যক্রম ও আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বঘ্নে সৃষ্টি করা এবং আইনজীবী হিসাবে পেশাগত নৈতিকতা চরমভাবে লঙ্ঘন করার অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আইনজীবীর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সচিব, সভাপতি, সহ-সভাপতি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বরাবর ১৮২ নং স্মারকে চিঠি প্রেরণ করেন সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান। পাশাপাশি সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির নিকট গঠনতন্ত্র মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন। সে মোতাবেক উক্ত মিটিংয়ে আইনজীবী সমিতির সদস্য এ্যাডঃ আকবর আলীর সদস্যপদ বাতিল করা হয় এবং তার কোষাধ্যক্ষ পদও শুন্য করা হয়। তবে, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তিনি নারী শিশু ৬২/২০ মামলাসহ অপর একটি মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না এবং আইনজীবী সমিতির ওকালতনামাসহ কোন কাগজপত্র ব্যবহার করতে পারবেন না।