নিজস্ব প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ১ মাস ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও স্বাভাবিক জীবন-যাপন শুরু করতে পারেনি উপকূলীয় অঞ্চল কাশিমাড়ী ইউনিয়নের মানুষ। অতিকষ্টে জীবন যাপন করে সেখানকার নি¤œ আয়ের মানুষ গুলো। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এখনো চলছে বেড়ীবাধ নির্মাণের কাজ। ভালো নেই সেখানকার মানুষ। খেয়ে না খেয়ে চলছে তাদের জীবন। এমনটাই দাবি করেছেন ভাঙ্গন কবলিত কাশিমাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। জানা গেছে, সম্প্রতি গত ২০ মে সুপার সাইক্লোনে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সাতক্ষীরার উপকুলীয় অঞ্চল শ্যামনগর ও আশাশুনি বিভিন্ন এলাকা। সে সময় নদীর জোয়ারের চাপে ভেঙে যায় কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ঝাপালি-ভোলা এলাকার বেড়ীবাধ। প্লাবিত হয় ইউনিয়নের শত শত বিঘা মৎস্য ঘের, ফসলী জমি। তলিয়ে যায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি। ঝড়ের আঘাতে এ ইউনিয়নের মানুষের তেমন ক্ষতি না হলেও ভেড়ীবাধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের। কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গাংআটি গ্রামের অহেদ আলীর স্ত্রী তাছলিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী একজন অসুস্থ্য মানুষ। ঝড়ে তেমন ক্ষতি না হলেও ভেড়ীবাধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে বসবাস একমাত্র ঘরটি ভেঙে পড়ে। কোন রকমে পলেথিন টানিয়ে বসবাস করছি। চাল ছাড়া তেমন কোন সাহায্য এখনো আমরা পাইনি। ইউনিয়নের খেজুরআটি গ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা জবেদা খাতুন বলেন, স্বামী যশোর জেলায় বিয়ে করে সেখানে থাকেন। আমি সন্তানদের নিয়ে কাঁচা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করি। ঝড়ের আঘাতে ঘরটির কোন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও প্লাবিত হওয়ার কারণে বসবাসের ঘরটি ধ্বসে পড়ে। বর্তমানে পাশ্ববর্তী সাইক্লোন শেল্টানে অবস্থান করছি। এদিকে, ভাঙনের প্রায় ১ মাস ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সেখানে বাধ নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নিজেরাই বাধ নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান কাশিমাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রউফ। তিনি আরে জানান, খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে তার ইউনিয়নের
খেজুরহাটি, ঝাপালি, জয়নগর ও কাশিমাড়িসহ ৬টি গ্রাম পানিতে ডুবে আছে। উপকূলীয় বেড়িবাঁধ রক্ষায় এখন শেষ ভরসা জনগণ। দুর্যোগে যতবার বাঁধ ভেঙেছে, ততবারই স্থানীয় জনতা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সেই বাঁধ মেরামত করেছে। এবারও সুপার সাইক্লোন আম্পান তান্ডবেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্লান পাঠিয়ে সেটি পাশের অপেক্ষায় রয়েছে। অথচ আমার পানির নিচে। যে কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপেক্ষায় না থেকে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমেই বাধ ইতোমধ্যে নির্মাণ করেছি। তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতীর কারণে আমার ইউনিয়নের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখনো তারা প্লান পাশের অপেক্ষায় বসে আছে। তবে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু সরকার জানান, বেড়ীবাঁধ নির্মাণ এখন আর শুধু মাত্র স্বেচ্ছাশ্রমই একমাত্র ভরসা এটি বলার সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে আমরা অনেক স্থানে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ শুরু করেছি। এছাড়া মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলোতে সেনাবাহিনী কাজ শুরু করেছে।
০৩.০৭.২০২০