জাতীয়

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ‘আইটি প্রধান’ গ্রেফতার

By Daily Satkhira

May 02, 2017

আল-কায়েদার অনুসারী জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সামরিক শাখার আইটি প্রধান আশফাকুর রহমান অয়নকে বেশ কিছুদিন ধরেই খুঁজছিল পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। সিলেট থেকে ঢাকায় এসে গুলশানের কাছাকাছি এলাকায় তাদের গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ে মোষ্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা মেজর জিয়ার প্রধান এ সহযোগী।

তার পুরো নাম আশফাকুর রহমান এবং ডাকনাম অয়ন হলেও বিভিন্ন সময় সে আরিফ বা অনিক নামও ব্যবহার করত বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে।

কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পড়ার সময় ২০১৪ সালে সে এবিটি’র সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। ২০১৫ সালে সংগঠনটির সামরিক বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয় সে।

পরে এবিটি’র সামরিক বিভাগের ‘আইটি প্রধানের’দায়িত্ব পায় আশফাকুর অয়ন। অন্য কাজের পাশাপাশি ব্লগারদের সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন সাইটের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব ছিল তার। পরে ওইসব অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য চলে যেতো ‘হিট লিস্টে’র বিস্তারিত কলামে। এরপর পরিকল্পনা করে আক্রমণ করা হতো ব্লগারদের উপর।

গত কয়েক বছরে একাধিক ব্লগার হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে এবিটি।

এসব হত্যাকাণ্ডের আগে ‘হিট লিস্টে থাকা’ ব্লগারদের হত্যা করার জন্য রাজধানীর পল্লবী ও উত্তরায় তিনটি প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নেয়ার কথা জানিয়েছে আশফাক।

গ্রেফতারের সময় তার কাছে ওসামা বিন লাদেন রচিত প্রবন্ধ এবং ব্লগার হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ রুটিনও পাওয়া গেছে।

‘হিট লিস্টে’ সহায়তা ছাড়াও বিদেশী লেখকদের উগ্রবাদী লেখা বাংলায় অনুবাদ করে তা বরখাস্ত মেজর জিয়া ও তামিম চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’র ওয়েব পেজ ছাড়াও বিভিন্ন মাধ্যমে নিয়মিত আপলোড করে প্রচার করত এবিটি’র সামরিক বিভাগের ‘আইটি প্রধান’।

জিজ্ঞাসায় গোয়েন্দারা তার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, কয়েক মাস আগে তার সঙ্গে মেজর জিয়ার সর্বশেষ দেখা হয়েছিল। সর্বশেষ যোগাযোগ হয়েছে মাস দুয়েক আগে। তবে, এখন মেজর জিয়ার অবস্থান সে জানে না বা প্রাথমিক জিজ্ঞাসায় তা জানায়নি।

শুধু মেজর জিয়া না, আশফাকুর অয়ন নারায়নগঞ্জে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত নব্য জেএমবির শীর্ষনেতা তামিম আহমেদ চৌধুরীরও ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল। জঙ্গি তামিমের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ‘দাওয়া ইল্লাল্লাহ’ওয়েব পেজে উগ্রবাদী লেখা প্রকাশের দায়িত্বে ছিল অয়ন।

তার লেখার বিষয়ের মধ্যে ছিল: মুসলিমদের রক্তের পবিত্রতা, স্পেন বিজয়ে তারিক বিন জিহাদের বক্তব্য, আমেরিকার জুলুমসহ ধর্মীয় উগ্রবাদ। এসব লেখা বাংলায় অনুবাদ করে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করত সে।

মনিরুল ইসলাম বলেন: আশফাকের কাজ ছিল নাস্তিক ব্লগারদের বিভিন্ন পোস্ট ও এক্টিভিটিস দেখে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন-ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা। এরপর ওইসব অ্যাকাউন্টের ভেতরে ঢুকে বাসার ঠিকানা, কর্মস্থল ইত্যাদি ব্যক্তিগত তথ্য বের করে তাদেরকে টার্গেট করার কাজ করত সে।