নিজস্ব প্রতিনিধি : মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাতক্ষীরার গরিবের ডাক্তার নামে খ্যাত সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ এবাদুল্লাহ। গত ৯ জুলাই যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়রে (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার থেকে পাওয়া নমুনা রিপোর্টের তার করোনা সনাক্ত হয়। ডাক্তার এবাদুল্লাহর ছেলে নিয়াজ ওয়াহিদ জিমি বলেন, সম্প্রতি আব্বার সর্দি কাশি হলে আমার দুরে দুরে থাকতাম। গত ৪ জুলাই বিকাল ৪টার পর বাবা তার নিজ চেম্বারে রোগী দেখতে দেখতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. কাজী আরিফ আহম্মেদ সিটি স্ক্যান করে জানান তার ফুসফুসে করোনার লক্ষ দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার তার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে ডাঃ এবাদুল্লাহ মারা গেছেন এক গুজব ছড়িয়ে পড়ে সাতক্ষীরায়। এতে তার পরিবারের সদস্যরা অত্যান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরিবারের বরাত দিয়ে তার পুত্র জিমি বলেন, প্রকৃত পক্ষে সাতক্ষীরার গণমানুষের দোয়া ও আল্লাহর কৃপায় সকলের প্রিয় চিকিৎসক তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের আইসিইউতে চিকিৎাসাধীন আছেন এবং মোটামুটি ভালো আছেন। তিনি ইন্তেকাল করেন নি। সুতরাং কোনো রকম গুজবে কান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি গরিব মানুষের দোয়া এখনো বেঁচে আছেন। তবে ডায়েবিস টা উঠা নামা করছে। সাতক্ষীরা শহরের ভ্যান চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা ডাঃ এবাদুল্লাহ। মাত্র ১০টা ফি নিয়ে তিনি আমাদের সেবা দেন। তিনি চলে গেলে আমাদের মত ভ্যান-রিকসা চালক এবং অসহায় দ্বীন মজুরদের চিকিৎসা নিতে অনেক হয়রানি হতে হবে। কারণ ৫০০-১০০ টাকা ফি দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তার মত মানুষ আর কখনো পাবো কি না আমাদের জানা নেই। দোয়া তিনি সুস্থ্য হয়ে আবারো আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, ডাঃ এবাদুল্লাহ যুগের পর যুগ নামমাত্র মূল্যে গরিব মানুষদের চিকিৎসা দিয়ে এসেছেন। তার সুস্থ্যতা নিয়ে গরিব মানুষ খুবই উদ্বিগ্ন। তার মানুষের বর্তমান সময়ে খুবই প্রয়োজন। উল্লেখ্য: যখন সারা দেশে স্বাস্থ্য সেবার নামে রোগীদের জিম্মি করে টাকা রোজগারের হিড়িক পড়ে। ঠিক সে সময় সাতক্ষীরার ডাঃ এবাদুল্লাহ মাত্র ১০ টাকা ফি নিয়ে গরিব মানুষকে সেবা দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছেন। তিনি জেলার গরিবের একমাত্র ভরসা হিসেব পরিচিত। তিনি সব সময় মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে। করোনা পরিস্থিতিতে পরিবারের পক্ষ থেকে রোগী না দেখার অনুরোধ করা হলেও তিনি গরিব মানুষের সেবা বন্ধ করতে নারাজ।