ভিন্ন স্বা‌দের খবর

বিশ্বের বিস্ময় মরুভূমির হাত!

By Daily Satkhira

May 03, 2017

মরুভূমির মাঝখানে বিশাল এক হাত। তবে সম্পূর্ণ একটি হাত নয়, ভালভাবে দেখা যায় ৫টি আঙুল মাত্র, তবে কবজি পর্যন্ত নজর যায় না। ধূ ধূ বালির মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই হাত। দানবীয় এই হাতটি কার? কোথা থেকে এল? রহস্য ঘিরে ধরেছে সবাইকে। মরুভূমির মাঝে হঠাত্‍ এত্ত বড় হাত কোথা থেকেই বা আসতে পারে? কবজির নিচটা বালির নিচে।

চিলি’র আটাকামা মরুভূমিতে এই বিশাল বিস্ময়ের সৃষ্টি। হঠাৎ করে দেখলে মনে হতেই পারে কোনও ফিউচারিস্টিক সিনেমার সেটে ঢুকে পড়েছেন। কিন্তু এই হাতটি আসলেই সত্যিকার চিত্র। চিলির এই আটাকামা মরুভূমি পৃথিবীর অন্যতম শুকনো এলাকা হিসাবেই পরিচিত। এই মরুভূমির এক খাঁ খাঁ প্রান্তরে হঠাত্‍ই চোখে পড়বে এই দানবীয় হাত। মরুর বালি ফুঁড়ে উঠে আসা হাতটি যেন থামতে বলছে কাউকে।

মানো দেল দেসিয়ার্তো বা হ্যান্ড অফ দ্য ডেজার্ট আসলে ৩৬ ফুট উঁচু একটি ভাস্কর্য। ১৯৯২ সালে চিলির প্রখ্যাত ভাস্কর মারিও ইররাজাবাল এটি তৈরি করেন। দেখতে যতই বিদঘুটে হোক না কেন, কাউকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য বা চমক তৈরির অভিপ্রায় তাঁর ছিল না। সম্পূর্ণ দার্শনিক ভাবনা থেকে ইররাজাবাল এটি তৈরি করেন।

মহাবিশ্বের কাছে মানুষের ক্ষুদ্রতাকে বোঝাতেই এই হাতটি তৈরি করেন ভাস্কর। দিকচিহ্নহীন মরুর প্রান্তরে এই হাতটি মানুষকে জানান দেয় তার ক্ষণস্থায়িত্ব, মহাপ্রকৃতির সামনে তার অসহায় অবস্থান। সেই সঙ্গে এটি যেন থামতে বলে অন্যায়, নির্যাতনকে, একাকীত্ব। এটিকে দেখে মনে হতেই পারে, মরুর বালি দিয়েই এটা তৈরি। কিন্তু আসলে এটি এক সুবিশাল লৌহকাঠামোর ওপরেই নির্মিত। ক্ষণে ক্ষণে মরুভূমির আবহাওয়ার পরিবর্তন যাতে এই ভাস্কর্যটির কোনও ক্ষতি করতে না পারে, তার ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন শিল্পী ইররাজাবাল।

বছরের যে কোনও সময় প্রচুর পর্যটক এখানে ভিড় করে। আন্তোফোগোস্তা থেকে প্যান-আমেরিকান হাইওয়ের পথে পড়ে এই ভাস্কর্য। লা মানো নামে আরেকটি হাত তৈরি করেছিলেন ইররাজাবাল। সেটি মরুভূমির হাতের চাইতে ১০ বছরের বড়। এটি রয়েছে চিলিরই পুস্তা দেল এন্তের সমুদ্রতটে।