অপ্রতিম : তৃণমূলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মাথায় রেখে জেলা ও থানায় বিরাজমান কোন্দল নিরসনে মিশন শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। এর অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১টায় সাতক্ষীরার নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রথমে গত ২৫ এপ্রিল এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বিশেষ কারণে তা আজ ৪ মে নির্ধারণ করা হয়। উল্লেখ্য, গত জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা জেলা আ. লীগের কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নেয়। ক্রমেই জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী দলীয় নেতা-কর্মীরা পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করা শুরু করে। প্রথমবারের মত দেশ ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস ঘোষিত হওয়ার পর এদিন জেলা আ.লীগের সভাপতি সমর্থক অংশটি ১৪ দলের ব্যানারে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট মোড়ে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে। এরপর ঘোনার ইউপি চেয়ারম্যান মোশার বিরুদ্ধে দলের সাধরণ সম্পাদককে প্রধান অতিথি করে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়র কিছুদিন পর মোশার পক্ষে জেলা সভাপতির সমর্থকরা সদর এমপিকে প্রধান অতিথি করে পাল্টা সমাবেশ করে। এছাড়াও সম্প্রতি জেলার শীর্ষ স্থানীয় নেতারা একে অপরের সম্পর্কে প্রকাশ্যে নানা অপ্রীতিকর বক্তব্য ও মন্তব্য করছেন যা নিয়ে দলের সচেতন অংশটি রীতিমত বিব্রত। এদিকে, দলের সিনিয়র নেতা এবং আ.লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি গত ২৬ মার্চ দলীয় কোন্দল নিরসনে প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি ওই দিন সন্ধ্যায় সাতক্ষীলা সার্কিট হাউজে উভয় পক্ষকে চায়ের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু শেষ মূহুর্তে একটি পক্ষ সেখানে উপস্থিত হতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলে জানিয়েছেন জেলা আ. লীগের এক শীর্ষ নেতা। এরপরই কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জেলার শীর্ষ নেতাদের ঢাকায় তলব করেন। কোন্দলের কারণ কি তা চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানে নির্দেশনা দেবেন তিনি। বছরজুড়ে ধারাবাহিকভাবে কোন্দলপূর্ণ সব জেলার সঙ্গে আলোচনায় বসবে দলটি। সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এবং কেন্দ্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদক নিশ্চিত করেছেন জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সভাপতি মুনসুর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম ছাড়াও সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি ও এস এম জগলুল হায়দার এমপি উপস্থিত থাকছেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের সাথে বৈঠকে। গত ১৯ এপ্রিল রাজধানীর ধানম-িস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকম-লীর এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কোন্দল নিরসনের এই মিশন কতটা সুফল বয়ে নিয়ে আসবে তা নিয়ে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতারা সন্দিহান।আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সুফল নিয়ে সভাপতিম-লী ও সম্পাদকম-লীর অন্তত ছয় জন নেতা বলেন, ‘কোন্দল নিরসনে জেলার নেতাদের সঙ্গে বসে আমরা আলোচনা করবো। বিদ্যমান সমস্যা কি তা চিহ্নিত করার চেষ্টা থাকবে। তবে সুফল আসবে কিনা তা এখনই বলা যাবে না।’ অবশ্য ইতিমধ্যে চট্ট্রগ্রামের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদেরের উদ্যোগ দৃশ্যত সফলতা পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিরোধ মীমাংসায় সাধারণ সম্পাদক নয়, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বসতে চান তৃণমূলের নেতারা। তাহলেই সত্যিকার অর্থে বিরোধ মীমাংসা সম্ভব বলে মনে করেন তারা। সাতক্ষীরার দায়িত্বশীল তিন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা নিজেদের জেলার বিরোধের কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘মীমাংসার জন্য সভাপতিকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।’ এ আলোচনার মাধ্যমে কোন্দল নিরসন কতখানি সম্ভব হবে তা নিশ্চিত নন সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি মনসুর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কোন্দল মীমাংসায় সবাইকে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে একমত হতে হবে। তাহলেই সুফল আসতে পারে।’ অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলছেন, “দেশকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে করে দলে এখন কোন্দলের কোন সুযোগ নেই। বরং সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকতে হবে নেতৃত্বের মধ্যে। যাতে করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সকলেই ভূমিকা রাখতে পারে