নিজস্ব প্রতিবেদক : এক নারীর সঙ্গে ছবি তুলে ব্লাক মেইলের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আদায়ের জন্য পাঁচ দিন আটক রাখা এক ব্যবসায়িকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ব্লাক মেইলকারি স্বঘোষিত এক মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারমান, ভূমিহীন নেতা, ঢাকা থেকে প্রকাশিত দু’টি পত্রিকার মালিক শহীদুল গাজী ও তার ব্লাকমেইলিংয়ের সহযোগী নারী আফসানা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলের সরদারপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক প্রতারক চক্রের হোতা শহীদুল ইসলাম স্বঘোষিত পরিবেশ সোসাইটি সাংবাদিক মানবাধিকার সংরক্ষণ এর চেয়ারম্যান, ঢাকা থেকে প্রকাশিত দু’টি পত্রিকার সম্পাদক ও কালিগঞ্জ উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামের মৃত ইমান আলী গাজীর ছেলে । তার সহযোগী নারী কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা এলাকার মৃত. কাজী আব্দুল আহাদের কন্যা আফসানা বেগম। স্থানীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নিজেকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদক ও সাংবাদিক পরিচয়ে ভূমিহীন শহীদুল ইসলাম ও সহযোগী আফসানা জেলা ও জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে মানুষকে জিম্মি করে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছিল। কয়েক বছর আগে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে শহীদুল একই এলাকার অসিত মণ্ডলের পক্ষ নেয়। এ নিয়ে অসিত মণ্ডলের দিয়ে প্রতিপক্ষ এক আইনজীবীসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করায়। অসিত মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষরা মামলা দিয়ে অসিত মণ্ডল বাড়ি ছাড়া হন। একপর্যায়ে আইনি সহায়তা দেওয়ার নাম করে অসিতের স্ত্রীর সঙ্গে জোর পূর্বক অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে শহীদুল। একপর্যায়ে ওই নারী বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ২০১১ সালে অসিত মণ্ডল সব কিছু ফেলে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হয়। ২০১০ সালে নিজে স্বাক্ষী হয়ে অসিত মণ্ডলের পক্ষে মামলা করানোর অভিযোগে আদালত চত্বরে গণপিটুনির শিকার হয়। ২০১৯ সালে প্রাণসায়র খালের দু’পাশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার উদ্যোগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সড়কের ক্ষুদ্র ফার্ণিচার ব্যবসায়ীদের হাইকোর্টে রিট করার নামে কয়েক দফায় চার লাখ টাকা নেয় শহীদুল। বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির জন্য সে পুলিশকে ব্যবহার করতো। আদালত থেকে জমি পাওয়ার পরও শাল্ল্যে গ্রামের এক ব্যক্তিকে উপপরিদর্শক বিপ্লবকে সঙ্গে নিয়ে তার জায়গা ছেড়ে দেওয়ার নামেমোটা অংকের টাকা আদায়ের চেষ্টা করে শহীদুল। মৌতলার স্বামীর উপর এসিড নিক্ষেপ মামলার আসামী আফসানাকে নিজের মত করে ব্যহার করতো শহীদুল। তাকে দিয়ে বিভিন্ন লোকজনদের ব্লাক মেইল করে টাকা আদায় করতো শহীদুল। এ ছাড়া রয়েছে শহীদুলের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ। তার অপকর্মকে জায়েজ করতে মুনজিতপুরের এক আওয়ামী নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতো শহীদুল। ঈুলিশ জানায়, সিরাজগঞ্জের জনৈক অহিদ আনাম সাতক্ষীরায় কাপড়ের ব্যবসা করতো। শ্যামনগরে এক ব্যবসায়িরর সঙ্গে টাকা লেনদেন নিয়ে বিরোধের ঘটনায় শহীদুল গত বুধবার অহিদ আনামকে তার পলাশপোল অফিসে ডেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় মক্ষীরাণী আফসানাকে দিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্লাক মেইল করতে পলাশপোল সরদারপাড়ার ভাড়া বাসায় আটক রাখে শহীদুল। অহিদ আনামের কাছে দাবি করা হয় মোটা অংকের টাকা। অহিদ আনাম রোববার দুপুরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে তাকে উদ্ধারের দাবি জানালে সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মানবাধিকার পরিচদানকারী শহীদুল ও তার সহযোগী আফসানা বেগমকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় অহিদ আনামকে। সদরথানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৯৯৯ অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত শহীদুল ও আফসানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী অহিদুল আনাম বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।