কালিগঞ্জ ব্যুরো : কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভিজিএফ কার্ডের চাউল বিতরণকালে মাপে কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থলে যেয়ে একটি অনলাইন পত্রিকার কথিত সাংবাদিক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগে ওই চিহিৃত চাঁদাবাজ সাংবাদিককে আটকে রাখে স্থানীয় জনতা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে। মৃত মোহাম্মদ আলী শাহাজীর ছেলে যুবলীগ নেতা আব্দুল আলিম (৩১), ভগিরাথ বিশ্বাসের ছেলে সুশান্ত বিশ্বাস (৩২), শেখ আব্দুর রশিদের ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৩) জানান, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ইউনিয়নের অসহায় মানুষের মাঝে ১০ কেজি হারে চাউল বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ বিশ্বাস ও ইউপি সদস্যরা পরস্পর যোগসাজসে ১০ কেজির পরিবর্তে ৮ কেজি ৭শ’ গ্রাম বা তার কম চাউল বিতরণ করছিলেন। স্থানীয় জনতা চাউল কম দেয়ার প্রতিবাদ জানালে চাউল বিতরণ বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। এ সময় নিজেকে আওয়ামী স্বাধীনতা প্রজন্ম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ও অনলাইন গণটিভির সাংবাদিক পরিচয়ে জিএম মামুন হোসেন উপস্থিত হয়ে ভিডিও এবং ছবি উঠাতে থাকেন। একপর্যায়ে কথিত সাংবাদিক জিএম মামুন চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ বিশ্বাসের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা ঘুষ নেন। বিষয়টি স্থানীয় জনতা দেখতে পেয়ে মামুনকে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে আটকে রাখে। বেলা ২ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে চেয়ারম্যানসহ এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে উপস্থিত সকলকে আশ্বস্ত করেন। পরে সাংবাদিক জিএম মামুনকে মুক্তি দেয় জনতা। এসব ব্যাপারে গণটিভি নামক অনলাইন পোর্টালের কথিত সাংবাদিক জিএম মামুন হোসেনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাউল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তিনিসহ তার ক্যামেরাম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। এসময় চেয়ারম্যান তার ক্যামেরাম্যানকে ১ হাজার টাকা দিতে যায়। কিন্তু ওই টাকা গ্রহণ করেননি বলে জানান তিনি। ইউপি সচিব মোহাম্মদ মনজুর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল ৯ টা হতে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৭৪৫ জনের, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৮০২ জনের এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৭৯ জনের চাউল বিতরণ শুরু হয়। বেলা ১২ টার দিকে স্থানীয়রা অভিযোগ দেন চাউল ১০ কেজিরও কম দেওয়া হচ্ছে। এরপর ২ টার দিকে ইউএনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত করেন। ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, একদল ছেলে আমার বিরুদ্ধে এসব রটিয়েছে। আমি সরকারি নিয়ম মেনে চাউল বিতরণ করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেল জানান, অভিযোগ পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে সতর্ক করি যাতে এই ধরণের ভুল ভবিষ্যতে আর না করে। ট্যাগ অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছি আরও বিস্তার তদন্ত করার জন্য। এরপর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।