কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ডা. হযরত আলীর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন

By Daily Satkhira

August 05, 2020

কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: ৭১ এর রণাঙ্গণের সম্মুখযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি, প্রবীণ চিকিৎসক ডাঃ হযরত আলী (৯০) কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। বুধবার বাদ জোহর নিজ জন্মস্থান উপজেলার হাড়দ্দাহ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তিনি উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দাহ গ্রামের মৃত আলহাজ্ব শের আলী গাজীর বড় ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কালিগঞ্জ উত্তরপার বাস টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকার নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন অসুস্থ্য থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধার সংগঠক হিসেবে স্বীকৃত প্রবীণ চিকিৎসকের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের দাবি তোলেন পরিবারের সদস্যরা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা। বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার পর মরহুম ডাঃ হযরত আলীর মরদেহ শহীদ সামাদ স্মৃতি ফুটবল ময়দানে নিয়ে আসলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে সম্মান জানানোর পর সেখানে প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে জানাযার নামাজে অংশগ্রহন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল, থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হুসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, মৃতের জামাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জানাজার নামাজে অংশগ্রহন করে। জানাযা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জম্মস্থান উপজেলা মথুরেশপুর ইউনিয়নের হাড়দ্দহ গ্রামে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রবীণ চিকিৎসক হযরত আলী ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রিত বাঙালি শরণার্থী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দিতেন। পাশপাশি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের কাছ থেকে কোনো ভাতা কিম্বা সম্মানি নিতেন না তিনি। ততকালিন সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে মুক্তিযুদ্ধের সনদের আবেদনের অনুরোধ জানালেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে নীতি ও নৈতিকতা সাথে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পতাকা তলে নিজেকে সঁপে দেন। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যা কান্ডের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তায় দাড়িয়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাতে প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের দাবি জানাতেন।