জাতীয়

২৩ আগস্টের মধ্যে সিনহা হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন

By Daily Satkhira

August 16, 2020

অনলাইন ডেস্ক : কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

রোববার (১৬ আগস্ট) কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জের কার্যালয়ে গণশুনানি শেষে কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান একথা বলেন।

তিনি বলেন, সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৬০ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রোববার ১১ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

রোববার সকাল ১০টার কিছু সময় পর শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জের কার্যালয়ে এই গণশুনানি শুরু হয়। এসময় তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেয়। তদন্ত কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলীসহ তদন্ত কমিটির সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সিনহা রাশেদ নিহতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত হয় এ তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান। সদস্য হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহা. শাজাহান আলী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ।

কমিটি প্রথমে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার থাকলেও পরে তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও ৭ দিন সময় বাড়ানো হয়।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হন। এই ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে। আর রামু থানায় একটি মামলা করা হয়।

পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক।

এর মধ্যে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পুলিশের চার সদস্য এবং এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গত শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।

এদিকে ঘটনার পর ১৫ দিন পার হলেও এখনো প্রধান সন্দেহভাজন সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, ফাঁড়ি ইনচার্জ লিয়াকত ও এসআই দুলাল মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। মূলত যে সাতজন রিমান্ডে আছে তাদের কাছ থেকে তথ্য নেওয়ার পরেই এ তিনজনকে রিমান্ডে আনা হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে তাদের দেওয়া তথ্যে সংশ্লিষ্টরা ঘটনার বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সিনহার ধারণ করা তথ‌্যচিত্রে পুরো টেকনাফের মাদক ব‌্যবসার চিত্র উঠে আসে। তথ‌্যচিত্রের জন‌্য ওসি প্রদীপের বক্তব্য নিতে হয় সিনহাকে। নিজের গোমড় ফাঁস হয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে সিনহাকে হত্যা করা হতে পারে।