দেবহাটা

দেবহাটায় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন

By daily satkhira

August 31, 2020

দেবহাটা ব্যুরো ॥ দেবহাটা সরকারী বিবিএমপি ইনস্টিটিউশন পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল ও সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনৈতিক ও অসামজিক কার্যকলাপ, অর্থ আত্মসাৎসহ সীমাহীন দূর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ এবং স্মারকলিপি প্রদান করেছে স্কুলের অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টায় স্কুলের অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহনে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে উপজেলা মোড় প্রদক্ষিন শেষে ফিরে পাইলট হাইস্কুল ও দেবহাটা থানার পাশে মানববন্ধনে ও প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। পরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল ও সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরীনের কার্যালয়ে গণস্বাক্ষরকৃত স্মারকলিপি প্রদান করেন এলাকাবাসী। এর আগেও একাধিকবার শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রক্ষার্থে সাবেক শিক্ষার্থী, অন্যান্য শিক্ষকসহ অভিভাবকদের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে বাদী হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল ও সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। এসময় দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুর রউফ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আলী মোর্ত্তজা মোঃ আনোয়ারুল হক, ইউপি সদস্য আরমান হোসেনসহ সরকারি বিবিএমপি ইনস্টিটিউশনের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার কয়েকশত সাধারন মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে ওই কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করেন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, মদন মোহন পাল বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের ছত্রছায়ায় অর্থ আতœসাৎ করার পাশাপাশি নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। সাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যোগসাজশে স্কুল গেটের সামনে ও বিদ্যালয়ের মার্কেটের দোকান ফান্ডের নাম করে দোকান তৈরীর পর ভাড়ার টাকা আত্মসাত ও দোকানের একটি অংশ সাবেক সভাপতির দখলে রাখা হয়েছে। নজরুল ইসলাম সভাপতি থাকাকালীন সময়ে তার অসামাজিক কার্যকলাপের সহযোগীতার জন্য এবং কালো টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত ফারুক হোসেনকে নৈশ প্রহরী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল। বক্তারা আরো বলেন, বিদ্যালয়ের পিছনের অংশে দীর্ঘদিনের চলাচলের পথ বন্ধ করে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম নিজের অফিস খুলে বসেছেন। সম্পূর্ন বিনা পয়সায় ভাড়া নেয়ার নাম করে নজরুল ইসলাম পৈত্রিক সম্পত্তির মতো স্কুলের জায়গায় নিজের অফিস ভোগদখল এবং সেখানে রাতের আধারে নারীদের নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড করেন। যা সম্পূর্ন অবৈধ। নজরুল ইসলামের অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ইতোপূর্বে তার বড় ছেলে আবুল কালাম বাদী হয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিল। এছাড়া স্কুলটি সরকারিকরনের নাম করে অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা তুলে আতœসাৎ করা এবং বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল ও সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ইতোপূর্বে প্রশাসনের এক তদন্ত প্রতিবেদনে বহুল বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পাল ও সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অর্থ আত্মসাৎ, রেজুলেশন খাতা তছরুপ ও স্কুলের নামে বরাদ্দকৃত ২ টন চাউল আত্মসাৎসহ প্রায় ডজনখানেক অভিযোগ প্রমানিত হয় বলেও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন। পরে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন অভিযোগ উল্লেখ করে এবং ঐসব দূর্নীতি অনিয়মের সঠিক বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাজিয়া আফরীনের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এব্যাপারে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি বিবিএমপি ইনস্টিটিউশনের বর্তমান সভাপতি সাজিয়া আফরীন বলেন, ইতোমধ্যেই দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে আহবায়ক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই রকেট ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রকিব হোসেনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে ইউএনও জানান।