নিজস্ব প্রতিনিধি : এক নিকাহ রেজিষ্টারের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগে সাংবাদিক পরিচয়দানকারি চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহষ্পতিবার রাত ১০টার দিকে তাদেরকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বেউলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বকচরা মোল্লাপাড়ার মন্তাজ মোল্লার ছেলে আব্দুল মান্নান, একই গ্রামের আফছারউদ্দিন সরদারের ছেলে হাফিজুর রহমান, একই উপজেলার আদালতপুর চালতেতলার আবুল কাশেম সরদারের ছেলে রবিউল ইসলাম ও সাতক্ষীরা শহরের কুকরালীর মোকিম হোসেনের ছেলে মোশাররফ হোসেন আব্বাস। আশাশুনি উপজেলার বেউলা গ্রামের ওসমান গণি সরদারের ছেলে মোঃ আসাদুজ্জামান সরদার জানান, বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আব্দুল মান্নান, মোশারফ হোসেন আব্বাস, হাফিজুর রহমান ও রবিউল নামের চার ব্যক্তি দু’টি মোটর সাইকেলে তার বাড়িতে যায়। এ সময় তারা নিজেদেরকে এক একটি নাম নাজানা সংবাদপত্র ও অন লাইনের স্টাফ রিপোর্টার পরিচয়ে বাল্য বিবাহ দেওয়া অভিযোগে তার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা চান। টাকা না দিলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়া ও পত্রিকায় নিউজ করার হুমকি দেন। একে করোনা তাতে বাল্য বিবাহ কেন বুড়ো বিবাহ হচ্ছে না বললে তার আরো বেপরোয়া হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদেরকে বাড়িতে বসিয়ে রেখে তিনি জেলা রেজিষ্টারকে ফোন করেন। তিনি বিষয়টি থানাকে অবহিত করার কথা বলেন। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাক বিতণ্ডাকালে স্থানীয়রা ছুঁটে এলে বেগতিক বুঝে ওই চার সাংবাদিক মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জনগন মোটর সাইকেলের চাবি আগে থেকে তুলে নেওয়ায় বিল আড় দিয়ে ভো দৌড় দিয়ে তারা পালিয়ে যায়। তবে সাতক্ষীরার বকচরা এলাকার কয়েকজন জানান, মোটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে আসা সাংবাদিক পরিচয়দানকারি চার চাঁদাবাজ তাদের মোটর সাইকেল ফিরে পেতে সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করার উদ্যোগ নেয়। এরপর আশাশুনি থানা পুলিশের মোবাইল পেয়ে তারা রাত ৯টার দিকে বেউলা গ্রামের নিকাজ রেজিষ্টারের বাড়িতে যায়। কিছুক্ষণপর পুলিশ এসে চাঁদা দাবির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই চার চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করে ন। জব্দ করা হয় তাদের ব্যবহৃত দু’টি মোটর সাইকেল। এদিকে সাতক্ষীরার কবচরা মোড়ের কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মান্নান, রবিউল ইসলাম ও হাফিজুর রহমান কবচরা মোড়ের কথিত রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য। মোশাররফ হোসেন আব্বাস মহিলা অধিদপ্তরের সামনে এক সময়কার রোহিঙ্গা ক্লাবের সদস্য ছিলেন। তারাসহ কয়েকজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে জেলাব্যাপি ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছিল। ওই চারজন গ্রেপ্তার হওয়ায় জেলার অন্য চাঁদাবাজ সাংবাদিক পরিচয়দানকারিরা অল্প সময়ের জন্যে হলেও থমকে গেছেন। জানতে চাইলে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবীর বলেন, এ ঘটনায় বেউলা গ্রামের নিকাহ রেজিষ্টার মোঃ আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত চারজনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার সকালে থানায় একটি মামলা(৫নং) দায়ের করেছেন। উপপরিদর্শক গাজী নুরুন্নবীকে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।