কালিগঞ্জ

চাম্পাফুলে গুম হওয়ার প্রায় ৪ মাস পর কিশোরের লাশ উদ্ধার ॥ পিতা ও সৎ মা আটক

By daily satkhira

September 05, 2020

চাম্পাফুল প্রতিনিধিঃ দীর্ঘ প্রায় চার মাস পর চাম্পাফুল ইউনিয়নের চাম্পাফুল ঢালি পাড়া গ্রামের আরিফুলের(১৮) গুম হওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ২৪মে ২০২০ কাবিখার ৬০০০ টাকা (আরিফুল কাজ করে) টাচ মোবাইল ফোন কেনার জন্য দাবি করে। কিন্তু আরিফুলের পিতা ইমান আলী মোড়ল ছেলেকে টাকা দিতে নারাজ। এজাহারে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৫মে২০২০ ৮:৩০ টার সময় কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং ঐ দিন রাত ১১:৩০ টার সময় ছেলেকে আরিফুলের সৎ মা এবং ইমান আলী মোড়লের ছোট বউ জহুরা মিলে আরিফুলকে হত্যা করে সেই রাতে গুম করে ফেলে। এরপর থেকে আরিফুলের পিতা ইমান আলী নাটক সাজিয়ে ছেলেকে খুঁজতে থাকে। এলাকায় সৎ পরিচয়ে বড় হওয়া আরিফুল হারিয়ে যাওয়ায় এলাকা বাসী ও ছেলেটির সন্ধান করতে থাকে। হৃদয়স্পর্শী ট্রাজেডির মোড় অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য পাষাণ্ড পিতা ইমান আলী গত ২৭আগস্ট২০২০ কালিগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এরই মধ্যে বলতে হয় “পাপকে ছাড়েনা বাপের” আরেক বার বাস্তবে পরিণত হলো। ৪ সেপ্টেম্বর ঘাতক পিতা ও সৎ মা অস্থির হয়ে পড়ে। তাদের কথার সূত্র ধরে চাম্পাফুল ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য রাধারাণী অধিকারী, সাংবাদিক শাকিলুর রহমান খান ও হায়দার ঢালি আসল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে এক পর্যায়ে ইমান আলী মোড়লের ছোট বউ জহুরা স্বীকার করে যে আরিফুল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, তারপর আমার স্বামী ইমান আলী মোড়ল গামছা দিয়ে টেনে বেড়ের(বসত বাড়ি) কোনায় মাটি চাপা দিয়ে রাখে। কিন্তু ঘাতক ইমান আলী ও ছোট বউ জহুরার বক্তব্যে মিল না থাকায় অনুমান করা হচ্ছে পরিকল্পিত হত্যা কাণ্ড ঘটিয়েছে। অনেকটা ক্রাইম পেট্রলের কায়দায় গুম হওয়া লাশের সন্ধান পায় এলাকা বাসী। ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর থেকে চাম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক, ইউপি সদস্য গোলাম কাইয়ুম, সাইলুজ্জামান খান, রাধা রাণী অধিকারী, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আসামীদের সাথে নিয়ে লাশ গুমের স্থান চিহ্নিত করে কালিগঞ্জ থানায় খবর দিলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থান পরিদর্শন করেন। ঐ দিন রাতে বাদী হয়ে আরিফুলের মা (ইমান আলীর বড় বউ তালাক প্রাপ্ত) খালেদা খাতুন আরিফুলের ঘাতক পিতা ইমান আলী মোড়ল ও ছোট বউ জহুরা খাতুনকে আসামী করে কালিগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে ৫ সেপ্টেম্বর বিকাল আনুমানিক ২:৩০ টার সময় মামলার আইও এস আই জিয়া ও কালিগঞ্জ থানার ওসি(তদন্ত) উপস্থিত থেকে চিহ্নিত স্থান থেকে গুম হওয়া আরিফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। আনুমানিক সাড়ে তিন ফুট গর্ত খুঁড়ে খেজুর পাতার পাটিতে জড়িয়ে লাশকে মাটি চাপা দেয় ঘাতক পিতা ইমান আলী মোড়ল। চাম্পাফুলের আব্দুল ওহাব (৫২)ও মোনতেজ আলী মোড়ল মাটি খুঁড়ে পাটিতে জড়ানো কিছু হাড়, আরিফুলের পরিহিত প্যান্ট পেয়েছেন। মামলার আইও এস আই জিয়া ও কালিগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত আজিজুর রহমান এলাকা বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন মামলার এজাহার ভুক্ত আসামীদের তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক সাজা দেওয়া হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আরিফুলের হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য সংগৃহীত হাড় ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।