নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে লাঞ্চিতের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এ ঘটনা ঘটে। দায়েরকৃত মামলায় ওই রাতেই ৩ যুবককে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। মামলা নং-১৮, তাং- ০৭.০৯.২০২০। আটককৃতরা হলেন, দেবহাটার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত. সঞ্চল মোড়লের পুত্র ইসমাইল হোসেন দীপ, শহরের বাঁকাল এলাকার সাতক্ষীরা পৌর ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সৈয়দ রাফিনুর রহমানের পুত্র সাইদুর জামান সাগর ও বাঁকাল এলাকার মোজাফফর রহমানের পুত্র মোস্তফা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শহরের বাঁকাল এলাকার দীপ (২৬) সেল্ফ ইনজুরি নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসে। ঐ সময় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে ডাঃ শারমিন ফিরোজ দায়িত্বে ছিলেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শারমিন ফিরোজ সঠিক ভাবে রোগী দেখেন। রোগীর খিচুনী থাকার জন্য এবং নিজে নিজের মাথায় আঘাত করেছেন জানতে পেরে তিনি রোগীকে ভতির ব্যবস্থা করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শারমিন ফিরোজ রোগীর অবস্থা জটিল এবং নেশাগ্রস্ত থাকার জন্য রোগীর লোকজন কে ডেকে বুঝিয়ে বলেন। তার মাথায় সি টি স্ক্যান লাগবে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফারর্ড ও লাগতে পারে। এসব কথা শোনার পরে রোগীর সাথে সাগর ও একই এলাকার মোজাফ্ফর হোসেনের গোলাম মোস্তফা সহ রোগীর সাথে থাকা লোকজন ডাক্তার কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এসময় জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত একজন স্টাফ এগিয়ে আসলে তাকে মারধর করে। তারপর তারা ডাক্তারকে মারতে আসে। ডাঃ শারমিন ভিতরের রুমে গিয়ে কোন মতে নিজেকে রক্ষা করে। এবং হুমকি দেয় যেখানে পাবে সেখানেই ডাক্তার শারমিন ফিরোজ কে মারবে এবং তার কাপড় খুলে নেবে। এব্যাপারে, তাৎক্ষনিক ফোনে সাতক্ষীরা সিজিল সার্জন কে জানানো হয়। ঘটনা শোনার পরে সিভিল সার্জন সদর থানা পুলিশকে অবহত করলে, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে আটক সাইদুল জামান সাগরের পিতা রাফিনুর প্রত্যক্ষদর্শী আল আমিনের বরাত দিয়ে বলেন, গতকাল রাতে দীপ অসুস্থ্য হলে তাকে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে খুলনা নিয়ে যেতে বলেন। এসময় ওয়ার্ডের একজন স্টাফ সেবা নিতে আসা রোগীসহ অন্যান্যদেরসাথে খারাপ ব্যবহার করে। এসময় ওই স্টাফকে একটি চড় মারেন তারা। এঘটনায় হাসপাতালের ৩জন চিকিৎসক তাদের দ্বিতীয় তালায় নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে পুলিশ ডেকে তাদের ধরিয়ে দেয়। কিন্তু সে সময় কেউ ওই নারী চিকিৎসকের সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি। মারপিটের বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তারা উল্টো মামলা দায়ের করেছে বলে তিনি জানান। এদিকে, ৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে আটক ৩ যুবকের ডোপ টেষ্ট(মাদক টেস্ট) করে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা মাদকের সম্পৃকতা পাওয়া গেছে বলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, নারী চিকিৎসক কে লাঞ্চিতের ঘটনায় তিন যুবককে রাতেই আটক করা হয়।
০৮.০৯.২০২০