আশাশুনি

গত দুই দিনের প্রবল জোয়ারের আবারও আশাশুনির রিংবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

By daily satkhira

September 20, 2020

আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনির কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদের গত দুই দিনের প্রবল জোয়ারের পানিতে আবারও রিংবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। এরফলে বানভাসিরা নতুন করে আবারও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। খাওয়ার কষ্ট তো রয়েছেই, তার উপর বিশুদ্ধ পানির সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বাঁধে বসবাস করা নারীরা পয়ঃনিষ্কাশনের সমস্যায় চরম বিপাকে পড়েছেন। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা ও আশাশুনি সদর ইউনিয়নের প্রায় ১০/১২ টি স্থানের রিংবাধ গত দুই দিনের প্রবল জোয়ারের চাপে ভেঙে যাতায়াতের প্রধান সড়কের (পাকা রাস্তার) উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। দীর্ঘ ৪ মাসেও টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মান না করায় এসব এলাকাকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে ও ২০ আগস্ট নদীর জোয়ারের পানির অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকুলীয় বেড়ী বাঁধ ও রিং বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বিশেষ করে প্রতাপননগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রাম এখনও পানিতে ডুবে রয়েছে। তার উপর চলতি অমাবশ্যার গোনে নদীর পানির প্রবল ¯্রােতে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে নতুন করে পানিতে নিমজ্জিত। দূর্গত মানুষের এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এলাকার শত শত মানুষ আবারও রিং বাধ দিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। এদিকে,আশাশুনি উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিদর্শন করে সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি দূর্গতদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছেন। তিনি এ সময় বলেন, খুব দ্রুতই টেকসই বেঁড়িবাধ নির্মানের কাজ শুরু করা হবে। আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী জানান, গত দুই দিনের জোয়ারে প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা,হরিশখালী, কর্মকারবাড়ী, কোলা, শ্রীউলা ইউনিয়নের কলিমাখালী, মাড়িয়ালা, কোলা ও আশাশুনি সদর ইউনিয়নের দয়ারঘাট এলাকায় রিংবাধ ভেঙে প্রবল বেগে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে দূর্গত মানুষেরা আবারও নতুন করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিনি আরো জানান, আগামী শুষ্ক মৌসুম অর্থাৎ নভেম্বর মাস নাগাদ এসব এলাকায় টেকসই বেড়িবাধ নির্মান শুরু হবে। উল্লেখ্য ঃ গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেঁড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিং বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বড় একটি অংশের লোকালয়ে চলে জোয়ার-ভাটা। কিছু কিছু এলাকায় রিংবাধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হলেও তা আবারও ভেঙে গেছে।##