আশাশুনি

আশাশুনিতে লক্ষাধিক বানভাসী মানুষের মানবেতর জীবন যাপন

By daily satkhira

September 25, 2020

আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার উপকুলীয় উপজেলা আশাশুনির প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বানভাসী মানুষ গত কয়েক দিনের বর্ষনে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের দীর্ঘ ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও টেকসই বেঁড়িবাঁধ নির্মান না করায় এই দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানির সাথে যুদ্ধ করে জীবন যাপন করছেন। ভিটে মাটি ছেড়ে খোলা আকাশের নিচে বেঁড়িবাধের উপর, আশ্রয় কেন্দ্রে, নৌকায় ও পানির উপর টোঙ ঘর বেধে কোন মতে জীবনযাপন করছেন তারা। নেই সুপেয় খাবার পানির ব্যবস্থা। ভেসে গেছে পায়খানা ঘরগুলোও। ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া চুলকানিসহ পানিবাহিত নানা রোগ। তার উপর খাওয়ার কষ্ট তো রয়েছেই। এদিকে, উপকুলীয় উপজেলা শ্যামনগরের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় নতুন করে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। ইতিমধ্যে ৯ নম্বর সোরা গ্রামের দৃষ্টিনন্দন এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর বেঁড়িবাধ ভেঙে প্রায় ৫০০ ফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সেখানে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাসুদুল আলমের নেতৃত্বে শত শত মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাধ নির্মানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, তার ইউনিয়নের ২২ টি গ্রামই এখন পানিতে নিমজ্জিত। তার উপর গত কয়েক দিনের বর্ষনে বানভাসী মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। খাওয়ার কষ্ট তো রয়েছেই, তার উপর সুপেয় পানির কষ্ট, বাথরুমের কষ্ট, সব মিলিয়ে নিদারুন কষ্টের মধ্যে রয়েছে বানভাসীরা। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে তার নেতৃত্বে স্থাণীয় হাজার হাজার মানুষ হাজরাখালী থেকে কোলা পর্যন্ত সাড়ে ৭ কি.মি. রিংবাধ দিয়ে কিছু কিছু এলাকায় পানি বন্ধ করেছেন। আজ সকাল থেকে চলছে কলিমাখালী নামকস্থানের রিংবাধের কাজ। আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী জানান, প্রতাপনগর ইউনিয়নের ১৭ টি গ্রামের মধ্যে ১৫ টি গ্রাম, শ্রীউলা ইউনিয়নের ২২ টি গ্রাম ও আশাশুনি সদর ইউনিয়নের প্রায় ১০ টি গ্রাম এখনও পানিতে নিমজ্জিত। তিনি আরো জানান, আগামী শুষ্ক মৌসুম অর্থাৎ নভেম্বর মাস নাগাদ এসব এলাকায় টেকসই বেঁড়িবাধ নির্মানের কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য ঃ গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেঁড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিং বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের বড় একটি অংশের লোকালয়ে চলে জোয়ার-ভাটা। কিছু কিছু এলাকায় রিংবাধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হলেও গত এক সপ্তাহ আগে প্রবল জোয়ারের চাপে তা আবারও ভেঙে যায়।