কেশবপুর প্রতিনিধি : কেশবপুরে ৫ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে সাগরদাঁড়ির নতুন জোনাল অফিস। নতুন জোনাল অফিসটি উপজেলার একেবারে শেষ প্রান্তে হওয়ায় শুধুমাত্র বিদ্যুৎ বিল দিতে অন্যপ্রান্তের গ্রাহকদের পাড়ি দিতে হচ্ছে ১৫ কিঃ মিঃ পথ। কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসসহ সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকে বিল গ্রহন না করায় পল্লী বিদ্যুতের অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চরমভাবে ফুঁসে উঠেছে ভুক্তভোগী ১১ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কেশবপুর উপজেলার গ্রাহক। আর এই উপজেলা শহরেই অবস্থিত সরকারী হাসপাতাল, ক্লিনিক, থানা, ইউএনও অফিস, বড় বড় মিল, কারখানা, ব্যাংক, পল্লীবিদ্যুৎ অফিস, সরকারী স্কুল কলেজ সহ বিভিন্ন হাটবাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তাই প্রয়োজনের তাগিদে উপজেলার ১৪৪ গ্রামের মানুষ দিন-রাত শহরমুখো হয়ে থাকে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন পেশা-শ্রেনীর মানুষ কেশবপুর বাজারমুখো হওয়ায় অধিকাংশ গ্রাহকরা তাদের মাসের বিল কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে দিতে সমস্যা হয় না। কারন তাদের কোন না কোন প্রয়োজনে শহরে উঠতে হয়। অনেক সময় তারা শহরের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে এমনকি অন লাইনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন।
সম্প্রতি গত ১২ আগষ্ট তারিখে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অসাধু কিছু অফিসার প্রভাবিত হয়ে কেশবপুর উপজেলার একেবারে শেষ প্রান্ত তালা-চুকনগর ও কেশবপুরের সীমান্তবর্তি এলাকা সাগরদাঁড়িতে বিদ্যুতের আরেকটি জোনাল অফিস উদ্বোধন করেন। সাগরদাঁদি ইউনিয়ন ছাড়া আরো ৫ টি ইউনিয়নের গ্রাহকদেরকে এই অফিসের আওতাভুক্ত করা হয়। সেই ইউনিয়গুলো হচ্ছে, সাগরদাঁড়ির বিপরিতে উপজেলার অপর প্রান্তে অবস্থিত সাতবাড়িয়া, ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন। মনিরামপুর- কলারোয়া ও কেশবপুরের সীমান্তবর্তি এলাকায় এই দুই ইউনিয়নের অবস্থান। এই দুই ইউনিয়ন থেকে সাগরদাঁড়ির দূরত্ব প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কিঃ মিঃ।
কেশবপুর শহরের পশুহাটের গা ঘেঁষে মজিদপুর ইউনিয়নের অবস্থান। এই ইউনিয়নের মানুষ সকাল-সন্ধা কেশবপুর বাজারে সময় কাটাতে অভ্যাস্ত। এছাড়া হাসানপুর ও বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন এই নতুন জোনাল অফিসের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এই ৫ ইউনিয়নের একাধিক গ্রাহকের সাথে কথা হলে তারা চরম ক্ষোভের সাথে বলেন, হাতেগোনা গুটি কয়েক ব্যক্তিকে খুশি করতে বিদ্যুৎ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা প্রভাবিত হয়ে সাগরদাঁড়িতে নতুন বিদ্যুতের জোনাল অফিস করেছে। গ্রাহকদের মতামত না নিয়ে সম্পূর্ন অপরিকল্পিত ভাবে এই অফিসটি করা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের সেবার পরিবর্তে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। শুধুমাত্র মধুমেলা ছাড়া উপজেলার কোন ইউনিয়নের লোক বছরে একবারও সাগরদঁড়িতে যায় না। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুতের যে কোন সমস্যার ব্যাপারে তারা কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মাধ্যমে তার সামাধান করে থাকেন আর এখন থেকে বিদ্যুতের যে কোন বিষয়ে ১৫ কিঃ মিঃ পথ পাড়ি দিয়ে সাগরদাঁড়িতে যেতে হবে। এটা তাদের জন্য বিষফোঁড়া ছাড়া আর কিছু না। তাছাড়া তাদের বিদ্যুৎ বিলে সাগরদাঁড়ি জোনাল অফিসের সিল-সাক্ষর দেখলেই কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎসহ যে ব্যাংকগুলো বিদ্যুৎ বিল নিতো তারাও নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারনে বিল পরিশোধে তারা চরমভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছে। বিল পরিশোধের ব্যাপারে সাগরদাঁড়ির পরিবর্তে বিকল্প কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে অবিলম্বে পল্লী বিদ্যুৎ এর অসাধু ঐসব অফিসারের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে এইসব ভুক্তভোগী গ্রাকরা বলে তারা হুশিয়ারী উচ্চারন করেন।
এ ব্যাপারে যশোর পল্লী বিদ্যূৎ সমিতি- ২ এর জিএম প্রকৌশলী অরুন কমার কুন্ডু করোনায় আক্রান্ত থাকায় দায়িত্ব প্রাপ্ত কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, কমপক্ষে ২৫ হাজার গ্রাহক না হলে একটি জেনাল অফিস হয় না। সাগরদাঁড়ি বিদ্যুতের জোনাল অফিসে গ্রাহক সংখ্যা কম থাকায় সাগরদাঁড়ি ছাড়াও ৫টি ইউনিয়নের গ্রাহকদের এই নতুন জোনাল অফিসের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিলের বিষয়ে কোন সমস্য হলে পর্যায়ক্রমে সেটা সমাধান করা হবে।।