কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ও শ্বশুরকে মারপিটের অভিযোগ

By daily satkhira

October 03, 2020

নিজস্ব প্রতিনিধি :  কালিগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী ও শ্বশুরকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী শ্বশুর জামাতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বর্তমানে আহতরা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর কালিগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দ মধুসূদনপুর এলাকায় এঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শ্বশুর আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের বলাডাঙ্গা গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, আনুমানিক বিগত ১২ বছর পূর্বে কালিগঞ্জের মুকন্দ মধুসূদনপুর এলাকার আহম্মদ মোড়লের পুত্র আশরাফুল ইসলামের সাথে পারিবারিকভাবে বড় কন্যা আসমা খাতুনের বিবাহ প্রদান করেন। সে সময় গরু, সাইকেল, স্বর্ণের গহনা, আসবাবপত্রসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল মেয়ে জামাতাকে প্রদান করেন। কিন্তু বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যৌতুক লোভী জামাতা আশরাফুল যৌতুকের দাবিতে কন্যা আসমা খাতুনকে মারপিটসহ নানা নির্যাতন করতে থাকে। কিন্তু কন্যা আসমা খাতুন গরিব পিতার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে তার পিতাকে সব বিষয়ে না বলে নিরবে সহ্য করতে থাকে। এরপরও উপায়ন্তর হয়ে পিতার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদ অর্থ নিয়ে তার হাতে তুলে দেন আসমা খাতুন। এদিকে দিন দিন যৌতুকের দাবিতে এ নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে। ইতোমধ্যে তাদের ঘরে দুটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শালিশ করেও কোন সমাধান হয়নি। বিভিন্ন খুটিনাটি বিষয় নিয়ে আশরাফুল, তার মাতা রোকেয়া ও পিতা আহম্মদ আলী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ মারপিট করে আসমা খাতুনকে। সম্প্রতি গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে পুনরায় পিতার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার কথা বললে আসমা খাতুন অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী আশরাফুল তার মাতা রোকেয়া ও পিতা আহম্মদ আলী মোড়ল বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর আহত করে আসমা খাতুন কে। পরে তার কন্যাকে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য পিতা শফিকুল ইসলামকে ফোন করেন। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর পিতা শফিকুল সেখানে গিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে জামাতা আশরাফুলসহ তাদের ভাড়াটিয়া ৫/৭ জন ব্যক্তি শফিকুলকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে এবং খুন জখমসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি প্রদর্শন করে। স্থানীয় কয়েকজনের সহযোগিতায় আহত কন্যাকে সাথে নিয়ে ভুক্তভোগী শফিকুল সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা গুরুতর আহত আসমা খাতুন জানান, পিতা গরিব মানুষ হওয়ায় স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের মারপিটসহ নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে আসছিলাম। এমনকি মারপিটের কারনে শরীরের প্রতিটি গিরায় ব্যাথা হয়েছে বলে দাবি করেন নির্যাতিতা আসমা খাতুন। যদিও অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলাম মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, তার স্ত্রী আসমা খাতুন শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে সম্মান করে না। তাদের মারপিট করে এবং বিভিন্ন অযুহাতে তার জীবন অতীষ্ঠ করে তুলেছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, আশরাফুল তার স্ত্রীকে মারপিট করেছিল। কিন্তু শ্বশুরকে মারপিটের বিষয়টি সঠিক নয়। তবে তাদের সংসারে বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে শান্তি বিরাজ করছিল।