জাতীয়

আটকের আগে হাজী সেলিমপুত্র ইরফানের কাণ্ড!

By Daily Satkhira

October 27, 2020

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর চকবাজারের ২৬ দেবিদাস ঘাট হাজী সেলিমের রাজকীয় ভবন ‘চান সরদার দাদা বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন হাজী সেলিমের আলোচিত পুত্র ইরফান সেলিম।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ৯ তলা এ বাড়িতে অভিযানে ঢুকেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট, র‌্যাব-৩ ও র‌্যাব-১০ এর সদস্যরা। ওই সময় হাজী সেলিমের ওই পুত্র মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তিনি গ্রেফতার করতে যাওয়া র‌্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।

অভিযানে অংশগ্রহণকারী এক র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, ৪তলার ইরফানের কক্ষটি ভেতর থেকে লক করা ছিল। বাড়ির কেয়ারটেকারকে সঙ্গে নিয়ে সেই রুমে যান অভিযানকারীরা। কেয়ারটেকারের ডাকে দরজা খুলেন ইরফান। এসময় তিনি ঢলতে ছিলেন। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মকর্তাদের দেখে ইরফান বলতে থাকেন- হু আর ইউ? অ্যাম আই এ ক্রিমিনাল? উইল ইউ অ্যারেস্ট মি?।

র‌্যাবের একটি সূত্র জানায়, র‌্যাবের অভিযানের আগেই বাড়ির আশপাশের মোড়ে মোড়ে ইরফান সেলিমের লোক দাঁড়ানো ছিল।

র‌্যাবের ধারণা, ওয়াকিটকি দিয়ে পুরো এলাকা নজরদারি করছিল। ওই বাড়ি থেকে একটি ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক স্টেশন উদ্ধার করা হয়েছে। যেখান থেকে ৩৮টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়াকিটকি পাওয়া গেছে। যেগুলো সাধারণত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করেন।

এ রুমের একপাশে থাকতেন হাজী সেলিমের ছেলে এরফান সেলিম। পাশের আরেকটি রুমে থরে থরে সাজানো আরও নানা ডিভাইস আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহৃত ওয়াকিটকি আর ড্রোন ক্যামেরাসহ নানা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি।

এমনকি মিলেছে হ্যান্ডকাপও। তৃতীয় রুমের বিছানার ম্যাট্রেস উঠানোর পরই দেখা যায় গুলিভর্তি একটি বিদেশী অবৈধ পিস্তল আর বিভিন্ন পরিচয়পত্র। আছে দেশী-বিদেশী নানা ব্রান্ডের মাদকদ্রব্যও।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরফান সেলিমের ৪তলার বেডরুমে একটি মদের খোলা বোতল এবং একটি বক্সে আরও বেশ কয়েকটি বিদেশী মদের বোতল পাওয়া গেছে। তাকে মদ্যপ অবস্থায় আটক করা হয়।

র‌্যাবের ধারণা এই ওয়ার্লেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চাঁদাবাজি সন্ত্রাস ও জিম্মি করাসহ নানা অবৈধকাজে তার ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে তারা এই ওয়াকিটকিগুলো ব্যবহার করতো। এমনকি এই ভবনের পার্শ্ববর্তি একটি ভবনে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে।

যেখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রতিপক্ষকে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে জিম্মি করে টর্চার করা হতো বলে ধারণা করছে র‌্যাব। ওয়াকিটকি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পুরনো ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকার ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত তারা এই নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে পারতো। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা চাঁদাবাজি করতো। বাড়িটি শক্তিশালী সিসিক্যামেরাভুক্ত থাকার পরও তারা ওয়ার্লেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতো।