সাতক্ষীরা

নিহত পুলিশ কর্মকর্তার পিতা-মাতাকে ঘর নির্মাণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার

By daily satkhira

October 30, 2020

আসাদুজ্জামান : সাতক্ষীরার আশাশুনিতে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত পুলিশের এ.এস.আই শাহ জামালের মা-বাবাকে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। যশোরের শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে শাহ জামালের পিতা-মাতার কাছে বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্বোধন শেষে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। পরে তিনি শাহ জামালের কবর জিয়ারত করেন। বসতঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শাহাজামালের মা-বাবা। এসময় পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আশাশুনি থানায় কর্মরত অবস্থায় শাহ জামাল সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি। বিশেষ করে তার পিতা-মাতার বাসযোগ্য কোন বসত বাড়ি ছিলনা। সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের উদ্যোগে শাহ জামালের পিতা-মাতার জন্য একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। মানবিক কারণে এ ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। দায়িত্বপালনকালিন সময়ে যেসব পুলিশ সদস্য বিভিন্ন দূর্ঘটনায় মারা গেছেন,তাদের পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান পুলিশ সুপার। নিহতের পিতা সুলতান বিশ^াস জানান,গরুর গোয়ালে তিনিসহ তার স্ত্রী বসবাস করতেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান মারা যাওয়ার পরে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। তার এই দুর্বিসহ দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে খুবই প্রশংসনীয়। নিহতের মা হাওয়া বিবি জানান, একদিকে ছেলেকে হারানোর বেদনা অন্যদিকে অভাবের তাড়নায় তারা দিশেহারা। এমন সময়ে মোস্তাফিজ আমার বড় সন্তানের দায়িত্ব পালন করেছে। আজ থেকে সে আমার বড় সন্তান। আমি মায়ের মত তার সফলতা কামনা করি। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে আশাশুনি থানার বুধহাটা বাজারে দায়িত্ব পালন শেষে থানায় যাওয়ার পথে চাপড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ট্রাকে রাখা বাঁশ তার পেটে ঢুকে গুরুতর আহত হন শাহ জামাল। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহ জামালের গ্রামের বাড়ি শার্শা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে। তার ৮ বছর বয়সী রাফি নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী বর্তমানে সন্তান সম্ভবা। তাদের মাঠে কোন জায়গ-িজমি নেই। শাহ জামালের ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম কৃষি শ্রমিক। শাহ জামালের পিতা-মাতা গোয়াল ঘরের এক পাশে বসবাস করতেন। তাদের এই দুরবস্থা দেখে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান নিজ উদ্যোগে দু’কক্ষ বিশিষ্ট এই ঘর নির্মাণ করে দেন। ##