আসাদুজ্জামান ঃ বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এবার তিনি ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচনের দায়িত্ব নিতে পারবেন না। দেশে আইনের শাসন নেই, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দেওয়া এমন বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়াত্বে ভুগছে। তাদের দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ক্ষমতায় না থাকলে টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশে পলাতে হবে। এ্যানি শনিবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির এক প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, জনগণ ২০১২ সালে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সারাদেশে আন্দোলন করেছিল, একইভাবে এবার জনগণের মধ্যে নতুন জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের উৎসাহ উদ্দীপনা এবং সাহস ও মনোবল দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে আরও শক্তিশালী করবে। জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি রহমাতুল্লাহ পলাশের সভাপতিত্বে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নেতা জয়ন্ত কুমার কু-ু, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ডা. শহীদুল আলম, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ, সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান প্রমুখ। আগামীতে কঠোর আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই মন্তব্য করে এ্যানি বলেন, দেশে আরও একটি ৫ জানুয়ারির জন্ম হতে দেবে না বিএনপি। আরেকটি আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ। বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, এখন সময় আছে গণতন্ত্র চাইলে আপনারা নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। বিএনপি চেয়ারপার্সন ঘোষিত ভিশন ২০৩০-তে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার ব্যাখ্যা রয়েছে। বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করবে। তিনি এ সময় পাড়ায়-মহল্লায় দলের চেয়ারপার্সনের এই বক্তব্য পৌঁছে দেওয়ার আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, বিএনপির একান্নটি টিম দেশের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে নেমেছে। এরই মধ্যে সারাদেশে বিএনপি আবারও গর্জে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে, এদিকে প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রিয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে সম্মেলন কক্ষে ডিবি পুলিশসহ সদর থানা পুলিশ প্রবেশ করে। এসময় দর্শক সারিতে বসে থাকা বিএনপির কর্মীদের একটি চেয়ারে লাঠির আঘাত করলে গ্রেফতার আতংকে হুড়ুহুড়ি করে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন থেকে দলীয় কর্মীরা ছিটকে বের হয়ে যায়। এসময় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন প্রতিনিধি সম্মেলনে দলীয় নেতা-কর্মী থাকবে। আপনারা কেন ? এসময় পুলিশ তাদেরকে হল রুম থেকে দ্রুত সবাইকে স্থান ত্যাগ করতে বলেন। জবাবে জেলা বিএনপির সভাপতি রহমত উল্লাহ পলাশ ৫ মিনিট সময় চাইলে সময় না দিয়ে পুলিশ তাদেরকে বেরিয়ে যেতে বলেন। শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি মাইক্রফোন নিয়ে বিভিন্ন দলীয় স্লোগান দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। এর পরপরই বাইরে অবস্থান নেওয়া পুলিশ বাঁশি দিতে শুরু করলে সকল নেতা-কর্মী সভাস্থল ত্যাগ করেন। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই সভাস্থল ফাঁকা হয়ে যায়। এব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুল হাসান বলেন, সম্মেলনের শেষ মুর্হুতে ডিবি পুলিশের একটি দল সভাকক্ষে প্রবেশ করে সম্মেলনে বাঁধা সৃষ্টি করে দলীয় কর্মীদের বের করে দেয়। সে কারনে তড়িঘড়ি করে সম্মেলন শেষ করতে বাধ্য হতে হয়।