শিক্ষা

সাতক্ষীরার ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ক্যান্সার আক্রান্ত হাসান বাঁচতে চায়

By Daily Satkhira

May 14, 2017

আফসানা রিনি : ‘আমি মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন রোগী। যদি আমি একটু সহায়তা পেতাম একটু মাথা গোজার জায়গা পেতাম। আজ আমি নিঃস্ব। যেখানে আজ আমার স্বপ্নের দিন গোনার কথা সেখানে আজ আমি মৃত্যুর দিন গুণছি।’ অভাব-অনটন আর আর পরিবারের অক্ষমতা প্রকাশ করে আবেগ-তাড়িত হয়ে কথাগুলো ফেসবুকে লিখেছেন ক্যান্সারে আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান। হাসান সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া সরকারপাড়ার কাজী এনামুল হকের ছেলে।

বছর দুই আগের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বড় ভাইয়ের সাথে হাসানের কথোপকথন ছিল এমন- ‘ভাইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যারা পড়াশুনা করি, সবাই যদি তাদের জায়গা থেকে দেশের জন্য, নিজেরা নিজেদের জন্য দায়িত্বটা ঠিকমতো পালন করতাম তাহলে অনেক সমস্যায় কিন্তু তারুণ্য দূর করতে পারে। আমি আমারটা সব সময় করে যাচ্ছি’।

অভাব আর আজকের ক্যান্সার নিয়ে হাসান লিখেছেন, ‘আমার পাকস্থলীতে ক্যান্সার, একদিনে হয়নি। সত্যি বলছি ভাই! আমার কাছে বেশির ভাগ সময় দুইটা টাকাও থাকত না। এখানেও আবার অনেকে বলবেন বাবা মাকে কেন বলনি? জেদি ছিলাম, দৃঢ় চিত্তের ছিলাম হারতে নারাজ ছিলাম। আমার পোশাকগুলা নিউমার্কেটের ফুটপাত থেকে ১৫০-২০০ টাকার মধ্যে খুঁজে নিতাম। গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া ফ্লাইওভারের নিচ থেকে ৩ হাজার টাকার জুতা ৩০০ টাকায় কিনতাম। সেটাই বন্ধুর কাছে বাড়িয়ে বলে নিছক আনন্দ হত।’

হাসানের পুরো নাম এ এইচ মোখলেচুর রহমান, পড়াশুনা করছেন রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বন্ধুমহলে সবাই তাকে নীরব নামেই চিনে। গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। বাবা মায়ের ৪ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট। পারিবারিক অনটন থাকা স্বত্বেও মেধা আর নিজের চেষ্টায় কিছুটা টার্গেট মিস করে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

সবসময় হাসি-খুশিতে চারপাশ ভরিয়ে রাখা মেধাবী শিক্ষার্থী হাসান। ভর্তির সঙ্গে সঙ্গেই ডালপালা মেলতে থাকে হাসানের হাজারো স্বপ্ন। মফস্বলের নিম্নবিত্ত পরিবারের এ সন্তান স্বপ্ন দেখতে থাকেন বড় চাকরি করে বাবা ও মা’র সংগ্রামের অন্ধকার ঘরে স্বাচ্ছন্দ্যের আলো ফেরাবেন।

কে জানতো সেই স্বপ্ন-বাজ নীরবকেই লড়াই করতে হবে চির-অন্ধকারে ঠেলে দেওয়ার ব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে! যে হাসানকে নিয়ে মা-বাবা দিন বদলের স্বপ্ন দেখছিলেন, সেই হাসান এখন প্রতিমুহূর্তে লড়ছেন মরণ-ব্যাধি ক্যান্সারের সঙ্গে।

হাসানের শরীরে ক্যান্সারের মাত্রা রয়েছে গ্রেড-৩ এ। তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার সাতক্ষীরার ফারজানা ক্লিনিকে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ মনোয়ারের তত্বাবধানে। সেখানে এরইমধ্যে তার চিকিৎসা বাবদ খরচ গেছে দুই লাখ টাকার মতো। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই পর্যায় থেকে হাসানের হাসিখুশি মুখ ফেরাতে প্রয়োজন ১২ লাখ টাকা।

কিন্তু  ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হাসানের বাবার পক্ষে ১২ লাখ টাকা যোগাড় করে ছেলের চিকিৎসা করানো একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু ১২ লাখ টাকা না পেলে যে নিভে যেতে পারে স্বপ্নবাজ এ শিক্ষার্থীর জীবন-প্রদীপ ও তার পরিবারের ভবিষ্যৎ!

স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম দিকে হাসানের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছিল। চিকিৎসা করার পরও তা বেড়ে আলসারে পরিণত হয়। ‌এক পর্যায়ে আলসারের চিকিৎসার দীর্ঘ সময় পরে চিকিৎসকরা জানতে পারেন হাসানের পেটে টিউমার হয়েছে। টিউমারটি ফেটে এ ক্যান্সার নীরবের পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে।

চিকিৎসকরা প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে বলেছেন, হাসানের ক্যান্সারের মাত্রা গ্রেড-৩ এ রয়েছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করছেন। হাসানের বাবা কাজী এনামুল হক জানান, হাসানকে একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ঢাকার মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত দিতে পারেন চিকিৎসকরা। আজই চূড়ান্ত রিোর্ট পেতে পারেন বলে জানান গেছে।

আপাতত যে মাত্রায় ক্যান্সার রয়েছে তা নিরাময় করতে ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন। যা বহন করা হাসানের পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। সেজন্য ছেলেকে বাঁচাতে কাজী এনামুল হক সরকার এবং সমাজের হৃদয়বান বিত্তশালীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

হাসানকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা বিকাশ (পার্সোনাল): 01767019216 ডাচবাংলা মোবাইল ব্যাংকিং: 01825754595-8, 01939651194-8 অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড: এ.এইচ. মোকলেচুর রহমান, সঞ্চয়ী হিসাব নং: 0200009803364

সরাসরি যোগাযোগ করা যাবে : র বাবা কাজী এনামুল হকের মোবাইল নম্বর 01716166159