আসাদুজ্জামান : উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া স্মারক ব্যবহার করার অভিযোগে সাতক্ষীরার দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজুর সুপারিশ শিরোনামে সংবাদটি রোববার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জেলাব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে। সংবাদটি ছিল রোববার দিনভোর “টক অব দি ডিসট্রিক্ট”। আর এ সংবাদটি যে সমস্ত পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সে সমস্ত পত্র পত্রিকা অনেকেই না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তারা ফঠোকপি ক্রয় করেছেন। সংবাদটি যখন সাধারণ পাঠকদের মুখে মুখে আলোচিত হচ্ছিল ঠিক তখনই এই প্রতিবেদককে ফোন করেন অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, “ভাই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানের ১১৩ জন লোক আমাকে ফোন দিয়েছেন। আপনি যেটা করেছেন আমার জন্য খুব ভাল হয়েছে। কারণ একটি বিজ্ঞাপন দিতে আমার অনেক টাকা লাগতো। অথচ বিনা টাকায় আমি আজ সারা জেলায় শিক্ষক নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছি। তবে, আমাকে শুধু শিক্ষক নেতা না লিখে যদি জেলা প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি লিখতেন তবে আরো ভাল হতো।” তিনি আরো বলেন, “ভাই এ জন্য আমি আপনার উপর কোন প্রকার রাগ করি নাই। কারণ আপনি আপনার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন।” উল্লেখ্য ঃ সদর উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা মো: জাকির হোসেন এবং গাংনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ইকরামুল কবির উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে ও ভূয়া স্মারক ব্যবহার করে সদর উপজেলাধীন ঘোনা পশ্চিমপাড়া কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০/০৭/২০০৯ তারিখের পূর্বে ০২ জন ও তেতুলডাঙ্গা কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০/০৭/২০০৯ তারিখের পূর্বে ০৩ জন শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক নিয়োগ দেয়া হয়েছে মর্মে তথ্য প্রেরণসহ কাগজপত্র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন এবং ওই ভূয়া শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে যোগদান করাতে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও কর্মরত শিক্ষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। বিদ্যালয় দুটির একটিতে মোঃ জাকির হোসেন এর স্ত্রী মোছাঃ শাহনাজ পারভীনকে এবং অন্যটিতে মোঃ ইকরামুল কবীর এর কন্যা মোছাঃ নাজনীন নাহারকে শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়। এই দুই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের নিকট তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আশরাফ হোসেন ৩০/০৮/২০১৫ তারিখে ১৯২৫/২ নং স্মারকে কৈফিয়ত তলব করলে ওই শিক্ষকদ্বয় ০৬//০৯/২০১৫ তারিখে তাদের দোষ স্বীকার করে জবাব দাখিল করেন। এরই প্রেক্ষিতে বর্তমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম স্বাক্ষরিত জেঃপ্রাঃশিঃ/সাত/সাপ্র-গঃ/২০১৭/১৪৬৪ নং স্মারকে গত ৪ মে ২০১৭ তারিখে বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা, খুলনা বিভাগ বরাবর প্রেরিত এক অফিসিয়াল চিঠিতে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ মোতাবেক বিভাগীয় বিভাগীয় মামলা রুজুর সুপারিশ করেন।