কালিগঞ্জ

কালিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা রাখেনি সংখ্যালঘুর জমি চেষ্টাকারিরা

By daily satkhira

January 04, 2021

নিজস্ব প্রতিনিধি : আদালতের রায় বিপক্ষে যাওয়ায় জামায়াত -বিএনপি’র সক্রিয় কর্মীদের নিয়ে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর গ্রামের সঞ্জয় সরদারের ছয় বিঘা জমির একাংশ নেট ও বেড়া দিয়ে জবরদখলের চেষ্টাকারি জামায়াত কর্মী আবু আসলাম লাল্টু কালিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও দু’ ইউপি চেয়ারম্যানের কথা রাখেননি। সোমবার দিনের মধ্যে বেড়া তুলে নেওয়ার অঙ্গীকার করলেও তিনি দিনভোর লুকোচুরি খেলেছেন। বিষ্ণুপুর গ্রামের সঞ্জয় সরদার বলেন, বিষ্ণুপুর মৌজায় পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত প্রায় সাত বিঘা জমি বংশপরম্পরায় ভোগদখলীকার রয়েছেন তিনি। ওই জমি এসএ রেকর্ডে খাস হওয়ায় রামনগর গ্রামের আছিরদ্দিন সরদার ওই জমি ১৯৬৬-১৯৬৭ সালে ২৯৬৭ নং বন্দোবস্ত দলিল করে নেন। ১৯৯৫ সালে ওই জমি বর্তমানে বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা আজিয়ার শেখের ছেলে আকরাম হোসেন মৌখিকভাবে ওই জমি তাকে দান করেছে মর্মে চলতি মাপ জরিপে রেকর্ড করিয়ে নেন। যদিও দখল স্বত্ব হিসেবে তার(সঞ্জয়) নামে রেকর্ড রয়েছে। ওই জমি আকরাম হোসেনের পক্ষে তার ভাই জামায়াতের সক্রিয় কর্মী আবু আসলাম লাল্টু দখল করার চেষ্টা করলে তিনি বাদি হয়ে বাংলাদেশ সরকার, আকরাম হোসেনসহ ৩২জনকে বিবাদী করে কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে দেঃ ৫১/১৭ নং মামলা করেন। এরপরও আবু আসলাম ও আকরাম ওই জমি জবরদখল করার চেষ্টা করলে তিনি মামলা করলে আদালতের রায় তার পক্ষে যায়। এর পরপরই একই আদালতে একই জমি নিয়ে লাল্টু বাদি হয়ে মামলা করলে তদন্ত প্রতিবেদন লাল্টুর বিপক্ষে যায়। বাস্তবে জমি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় আবু আসলাম লাল্টু গত ১০ আগষ্ট তাকেসহ নেপাল সরদারের নামে মারপিট, মোবাইল ছিনতাই ও একলাখ টাকা চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা করে। মামলায় পূর্ব পরিকল্পনা হিসেবে বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজউদ্দিন, গ্রাম পুলিশ জামায়াত কর্মী আব্দুলাহসহ আটজনকে সাক্ষী করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান লাল্টুর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জমি দখলে বাধা ও মারপিটের ঘটনা সঠিক বলে গত ২৫ নভেম্বর আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন। একপর্যায়ে শনিবার সকাল ৮টার দিকে আবু আসলাম লাল্টু, আকরাম হোসেন দোলনের নেতৃত্বে জামায়াত ও বিএনপি নেতা কর্মীরা শনিবার সকালে ওই জমির একাংশে বেড়া ও নেট দিয়ে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দেওয়ায় তাকেসহ চারজনকে মারপিট করে আহত করে। পরে পুলিশ এলে তারা লুকোচুরি খেলে বেড়া নির্মাণ কাজ অব্যহত রাখে। এ নিয়ে তিনি (সঞ্জয়) শনিবার দুপুরে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। রোববার সকালে প্রথম আলোর সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্র্জীসহ একদল জ্যেষ্ট সাংবাদিক ঘটনাস্থল ঘুরে কথা বলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে। বিকেলে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন, উপপরিদর্শক গোবিন্দ আকর্ষণ, উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার, বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজউদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে আবু আসলাম লাল্টুকে ডাকেন। সেখানো হাজারো লোকের উপস্থিতিতে লাল্টু সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে বেড়া অপসারন করে নেওয়ার ব্যাপারে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একইসাথে বিষয়টি নিয়ে আগামি ১১ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হলে উভয় পক্ষ ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজী হয়। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত লাল্টু বেড়া অপসারন করেনি। সোমবার সন্ধ্যায় আবু আসলাম লাল্টু’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ১১ জানুয়ারি বসাবসির কথা রয়েছে। তার আগে বেড়া তুলে দিতে বলেছেন। ১১ তারিখের আগে অবশ্যই বেড়া তুলে দেওয়া হবে। কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রিয়াজউদ্দিন ও দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হুসেন বলেন, লাল্টু কথা না রাখলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।