নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ঘুষুড়ি গ্রামে রাস্তার উপর ঘরের ভিত নির্মাণ করে দীর্ঘ ৪০ বছরের মানুষ চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে তিন মাস ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পাঁচটি পরিবার। ঘুষুড়ে গ্রাামের কওছার আলী জানান, ১৯৭৮ সালে স্ত্রী ফতেমার ঘুষুড়ি মৌজার পৈতৃক সাবেক ৮১ দাগে কেনা ১৭ শতক জমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে তিনি স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন। তিনিসহ প্রতিবেশি ছয়টি পরিবার পার্শ্ববর্তী সাবেক ৮২ দাগের উপর ওয়াজেদ আলীর বাড়ির সামনে ও আব্দুল মাজেদের কেনা জমির পাশের রাস্তা দিয়ে দীর্ঘ ৪২ বছর যাবৎ চলাচল করে আসছেন। বৃহষ্পতিবার সকালে কালিগঞ্জের তারালী ইউনিয়নের ঘুষুড়ি গ্রামে গেলে অমেদ আলী সরদার, আব্দুল করিম সরদার, আব্দুর রহিম সরদার, মোতালেব সরদার ও সামছুর রহমান জানান, কওছার আলীসহ কয়েকটি পরিবারের একমাত্র চলার রাস্তাটি দখল করে ঘর বানানোর প্রস্তুতি নিলে গত বছরের ১৩ অক্টোবর কওছার আলী বাদি হয়ে কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে মামলা(দেঃ-১০৮/২০ কালি) করেন। মামলায় আব্দুল মাজেদ, আব্দুল ওয়াজেদ ও জেলা প্রশাসকসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়। মামলার খবর পেয়ে আব্দুল মাজেদ ওই রাস্তা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করে। একই সাথে রাস্তার উপর কলা গাছ লাগিয়ে ও পায়খানা ঘর বানিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কালিগঞ্জ সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনান্থলে এসে খাস জমি চিহ্নিত করে আব্দুল মাজেদ ও ওয়াজেদকে গাছগাছালি কেটে ও রাস্তার উপর তৈরি ভিত অপসারন করতে বলেন। উপরন্তু ৮২ দাগের জমি নিয়ে তারা আদালতে মামলা করেছেন দাবি করে সহকারি কমিশনারের নির্দেশ মানছেন না। ফলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা একপ্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আব্দুল মাজেদ ও আব্দুল ওয়াজেদকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে আব্দুল ওয়াজেদের স্ত্রী ফেরদৌসি খাতুন বলেন, তার কাঁচা বাড়ি ওই খাস জমির উপর। আব্দুল মাজেদ তার কেনা জমিসহ ৮২ দাগের তিন শতক খাস জমিতে বাড়ি তৈরি করছেন। ওই জায়গায় রাস্তা ছিল না। তবে জমি নিয়ে মামলা থাকায় তার বাড়ির পিছন দিয়ে চলাচলের জন্য সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ কওছারদের বলে গেছেন। আব্দুল লতিফের বলা জমির উপর দিয়ে রাস্তায় বের হওয়া যায়না এমন কথার জবাবে তিনি বলেন, সেটা তাদের জানার কথা নয়। চম্পাফুল ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, মাজেদের জমির পাশ দিয়ে ও ওয়াজেদের বাড়ির সামনে দিয়ে আগে রাস্তা ছিল। এখন নেই। চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক যেভাবে বলে গেছেন তিনিও সেইভাবে চলাচলের জন্য কওছারদের বলেছেন। চম্পাফুল ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা প্রশান্ত সরকার আব্দুল মাজেদ সরকারি রাস্তা বন্ধ করে ঘর বানাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, তিনি মূল জমি চিহ্নিত করে লাল পাতা মেরে এসেছিলেন । এরপরও ঘর নির্মাণ বন্ধ না করলে সহকারি কমিশনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।