ফিচার

সাতক্ষীরায় বসতভিটায় ইটভাটা, জনদুর্ভোগ চরমে

By Daily Satkhira

January 16, 2021

আব্দুল জলিল : ড্রাম ট্রাকের শব্দে রাতে ঘুমাতে পারি না। সারারাত ধরে চলে ড্রাম ট্রাক। দিনের বেলায় ট্রাক আর ভ্যান চলাচলের কারনে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। আর ইটভাটার পাশের মানুষের শ্বাস কষ্টজনিত রোগ দিন দিন বেড়েইে চলেছে। গাছে এখন আর আগের মত ফল ধরে না। গ্রামের মধ্যে বসতবাড়ির জমিতে ইট ভাটা তৈরি করার কারণে এসব সমস্যা হচ্ছে সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে। ইটভাটার পাশে বসবাস রাবেয়া খাতুন, সুফিয়া পারভীন, আলেয়া খাতুনসহ অনেকে এসব অভিযোগ করে বলেন, তারা অনেক বার সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যারা দেখভাল করার জন্য আসে তারা ভাটা মালিকের নিকট থেকে নগত নারায়নে তুষ্ট হয়ে চলে যায়। তবে ইট ভাটা মালিক বলছে তিনি যখন ভাটা তৈরি করেছিলেন সে সময় এই এলাকায় কোন বসত বাড়ি ছিল না।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের তিন রাস্তার মোড়ে সতের বছর ধরে চলছে আর এস বি ব্রিকস। আর এট ভাটার কারণে এলাকার মানুষের সমস্যার অন্ত নেই। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এই গ্রাম।

স্থানীয় ঝাইডাঙ্গা কলেজের প্রভাষক জাহাঙ্গীর কবির, ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের মধ্যে ইটভাটা হওয়ার করণে রাত ১২টার পরে চলে ড্রাম ট্রাক। আর এই ড্রাম ট্রাকের শব্দে খেটে খাওয়া মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। দিনের বেলায় ভ্যান ট্রাক চলার করণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।

এসময় পাশে থাকা চায়ের দোকানদার আলমগীর হোসেন জানান, এই জায়গায় ইট বোঝাই গাড়ি তাকে ধাক্কা মেরে আহত করে। আজও সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারিনি। অসংখ্যা ছাগল ইতি মধ্যে ট্রলি আর ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে।

এই গ্রামের আব্দুল গফুর. মজিবর রহমান, জামাল উদ্দীন জানান, কৃষি জমি দখল করে ইট ভাটা তৈরি হয়েছে। আর এই ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। ফলে কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হচ্ছে না। আসাদুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ ও রকিব জানান, ধুলা আর ভাত এক সাথে ক্ষেতে হয়। তাদের গাছে এখন আর আগের মত ফল ধরে না। মানুষের রোগ ব্যাধি বেড়ে গেছে। নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে রাস্তায় ইট বোঝায় ট্রাক আর ট্রলি চলা চলের কারণে তাদের ছেলে মেয়েদের এই রাস্তা দিয়ে স্কুল, কলেজে যেতে দারুন কষ্ট হচ্ছে।

আর এস বি ব্রিকস ভাটা মালিকও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, তিনি সতের বছর আগে এই ভাটা তৈরি করেছেন। তখন এই এলাকায় কোন ঘরবাড়ি ছিল না। নেই এলাকার মানুষের কোন কর্মসংস্থান । তার ভাটায় ২২৮ জন লোক কাজ করে। কিছু লোকজন অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে তার বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে । সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক শরিফুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে কেউ কোন অভিযোগ করিনি। লিখিত অভিযোগ করলে খোজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।