জাতীয়

দেশের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : প্রধানমন্ত্রী

By Daily Satkhira

January 21, 2021

দেশের খবর : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘দেশের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার’ আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা বাঙালি হিসেবে আমাদের অর্জনের ও গৌরবের। আমাদের রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের প্রতিটি সংগ্রামের সূতিকাগার হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হতে পেরে আমি সত্যিই খুব গর্বিত।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে ‘সেলেব্রেটিং হানড্রেড ইয়ার্স অব দ্য ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা : রিফ্লেকশনস ফ্রম দ্য অ্যালামনাই-ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ন্যাশনাল’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালায় তখন তারা রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং ৩২ নম্বরের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি বেছে নিয়েছিল। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষককে হত্যা করেছিল। পরবর্তীতে যখন আমাদের বিজয় সন্নিকটে সে সময় আমাদের শিক্ষকদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। বিশেষ করে আমার বিভাগের তো অনেককেই আর আমি সারাজীবনেও দেখতে পারিনি। আমি আজ সবাইকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ ২০২১ আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। বাংলাদেশ এই সময়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এই স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিনে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের যে দক্ষ মানবশক্তি দরকার। এই দক্ষ মানবশক্তি গড়তে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে যাত্রাটা শুরু হতে পারে। যা অনুসরণ করে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে কাজ করতে পারবে। আমাদের যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে বা বিশ্ব যখন এগিয়ে যাবে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা যাতে চলতে পারি। সেভাবেই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার দিশা দিতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার কেন্দ্রবিন্দু। আমরা সেটাই চাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় অতীতের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে আমরা চাই এটি তার পুরোনো গৌরব ফিরে পাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কাজেই এর পুরোনো গৌরব আবার ফিরে আসবে, এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, গবেষণা হবে, শিক্ষার প্রসার ঘটবে। আমাদের সকল অর্জনের বাতিঘর যেটা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সে আলো ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলাদেশে।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি দৃষ্টিপাত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠা করা, পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষাকে যেমন গুরুত্ব দিয়েছি সেইসঙ্গে প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় আমরা তৈরি করে দিচ্ছি। যেটা আমি প্রথম শুরু করেছিলাম ৯৬ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে অনীহা ছিল। সেই অনীহা দূর করার জন্য এভাবে নামকরণ করে যাত্রা শুরু করি। এখন তো আমরা বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। আমি চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’

সম্মেলনের শুরুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্যসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট ও বিভাগের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।