জাতীয়

ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে টাকা আদায় : ৬ পুলিশ কনস্টেবল কারাগারে

By Daily Satkhira

February 08, 2021

অনলাইন ডেস্ক : চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে টাকা আদায়ের ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্য ফেঁসে গেছেন। ১০ লাখ টাকা দাবি করলেও তারা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা আদায় করে ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনায় জড়িতরা চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এসএএফ শাখায় কর্মরত ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা থানা পুলিশ তদন্তে নেমে এ ছয় পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। পরে রোববার চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে’র আদালতে তোলা হলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

কারাগারে পাঠানো পুলিশ সদস্যরা হলেন- কনস্টেবল মো. আবদুল নবী, কনস্টেবল এসকান্দার হোসেন, কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম, কনস্টেবল শাকিল খান, কনস্টেবল মো. মাসদু ও কনস্টেবল মো. মোরশেদ বিল্লাহ। এদের মধ্যে তিনজন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তার বডিগার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানাজী বলেন, আনোয়ারা থানার একটি অপহরণ করে অর্থ আদায়ের মামলায় ছয় পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে রোববার আদালতে পাঠানো হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত ছয় আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই মোতাবেক তাদের চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ভিকটিম ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে আটজন পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে আনোয়ারার পূর্ব বৈরাগী গ্রামে আমার বাড়িতে গিয়ে দরজা নাড়েন। পুলিশ পরিচয় পেয়ে আমি দরজা খুলে দেই। তারা আমার ভাইকে খুঁজে না পেয়ে আমার নামে মামলা আছে বলে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। চারটি মোটরসাইকেলে করে আনোয়ারা থেকে পটিয়া থানার কৈয়গ্রাম রাস্তার মাথা নামের এলাকায় নিয়ে একটি টং চা দোকানের সামনে বসান। সেখানে বসিয়ে মামলার নানা কথাবার্তা বলে ছাড়া পেতে গেলে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানান। আমার কাছে এত টাকা নাই জানানোর পর তারা পাঁচ লাখ টাকা দিতে বলেন। পরে তিন লাখ দিতে বলেন। এসময় আমি আমার চাচাতো ভাইদের ফোন করে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা তাদের হাতে তুলে দেই।

তিনি বলেন, তারা সেখান থেকে রাতে আমাকে ছেড়ে দিয়ে পটিয়ার দিকে মোটরসাইকেলে করে চলে যান। তার পর দিন এ ঘটনার কথা উল্লেখ করে আনোয়ারা থানায় আমি লিখিত একটি অভিযোগ দেই। এ চক্রটি আমার মতো আমাদের গ্রামের আরেক ব্যবসায়ী ফোরকান নামে একজনকে ফোন দিয়ে হুমকিধমকি দেন। তিনি তা ফোনে রেকর্ড করেন। দু’টি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে থানা পুলিশ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ছয় সদস্যের সম্পৃক্ততা পান। এ ছয়জনকে আটক করার পর আমি মহানগর পুলিশের ডিবির এক শীর্ষ কমকর্তার বডিগার্ডকে শনাক্ত করি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ অপরাধ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে কাজ করছে। এক্ষেত্রে কেউ অপরাধ করলে তিনি যেই হন না কেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। আনোয়ারায় একটি অপহরণের ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদেরও আইনের আওতায় আনা হয়। পেশাগত পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি।

তিনি জানান, আসামিদের মধ্যে কনস্টেবল মো. আবদুল নবী আনোয়ারার শোলকাটার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা মিয়ার বাড়ির মৃত বাছন আলীর ছেলে। আসামি কনস্টেবল এসকান্দার হোসেন পটিয়ার দক্ষিণ গেীবিন্দের খীলের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইব্রাহীমের ছেলে। কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম আনোয়ারার দক্ষিণ বারশত এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. হাসেমের ছেলে। কনস্টেবল শাকিল খান সীতাকুন্ডের পূর্ব বাটেরখীলের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শামসুদ্দিনের ছেলে। কনস্টেবল মো. মাসদু আনোয়ারার চাতুরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে এবং কনস্টেবল মো. মোরশদে বিল্লাহ মিরসরাইয়ের ফর ফরপরিয়া এলাকার সিরাজুল মোস্তফার ছেলে।