নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকায় কলেজ মাঠের পূর্ব পাশে সাবেক সেনাসদস্য রবিউল হাসানের বাড়িতে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে তার প্রতিবেশীরা। স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুসের পরিবারের লোকজন ও তার সমর্থক ছাড়াও বেশ কয়েকজন বহিরাগতকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির মধ্যে ঢুকে এই হামলা চালানো হয়। এসময় তাদের হাতে ছিল লাঠিসোটা ইটপাটকেল। হামলাকারীরা সাবেক সেনাসদস্য রবিউল হাসানের ঘরের টিনের চাল উল্টে ফেলে। ভেতর থেকে ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র টেনেহিচড়ে ফেলে দেয় এবং তার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন ও দুই মেয়েকে মারধর করে। তারা তাসলিমা খাতুনকে বাড়ির মধ্য থেকে চুলের মুঠো ধরে টেনেহিচড়ে বাইরে আনে এবং তার পরনের কাপড়চোপড় ছিড়ে ফেলে। এসময় তাসলিমা খাতুন ও তার দুই মেয়ে আহত হন। এরই মধ্যে হামলাকারীরা ওই বাড়ির একটি দুধের গাভীকে পিটিয়ে ধরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরিবারের পক্ষ থেকে তারা বাধা সৃষ্টি করলেই এসব ঘটনা ঘটে। সাবেক সেনাসদস্য রবিউল হাসান আরও জানান, প্রতিবেশীরা ছুটে এলে এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ আসার পরপরই হামলাকারীরা চলে যায়। তিনি জানান, ঘটনার সময় তার স্ত্রীর গলার সোনার চেইন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। তার বাড়িঘর. আসবাবপত্র ভাংচুর করে অনেক টাকা ক্ষয়ক্ষতি করেছে। এসময় তিনি ও তার ছেলে বাড়িতে না থাকার সুযোগে হামলাকারীরা আরও বেশী করে শাসিয়ে গেছে। এদিকে পুলিশ সেনাসদস্য রবিউল হাসানের স্ত্রী তাসলিমাকে উল্টো থানায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে বসিয়ে একটি মামলা করে বিকালে তাকে জেলহাজতে পাঠায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, গৃহবধূ তাসলিমা বটি হাতে নিয়ে বাড়ির বাইরে আসে। ভিডিও ফুটেজে সেটা ধরা পড়েছে। এসময় দুইজন নারী আহত হন বলে জানান তিনি। তবে রবিউল হাসান জানান, বাড়িতে হামলার পর আত্মরক্ষার জন্য তার স্ত্রী সহ অন্যরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। এসময় তাদেরকে টেনেহিচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকালে তিনি থানায় একটি মামলা জমা দিয়েছেন। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা রেকর্ড হয়নি বলে জানা গেছে। সেনাবাহিনীর সাবেক সার্জেন্ট রবিউল হাসান আরও জানান, আব্দুল কুদ্দুস এবং তিনি পাশাপাশি বসবাস করেন। বছর কয়েক আগে আব্দুল কুদ্দুস একটি বহুতল ভবন নির্মান করে মেয়েদের ছাত্রীনিবাস করেছেন। এই ছাত্রীনিবাস থেকে দিনে দুপুরে ও রাতে জানালা দিয়ে বিভিন্ন খাদ্যবর্জ্য, থুতু কাশি, মাথার চুল, পেপসি বোতল সহ নানা অপদ্রব্য বাড়ির মধ্যে ফেলে থাকে। এ নিয়ে বারবার ঝগড়াঝাটি হয়েছে। প্রতিবাদ করার পরও ছাত্রীনিবাস থেকে তা বন্ধ করা হয়নি। বরং আব্দুল কুদ্দুসের উস্কানিতে তারা এ কাজ বাড়িয়ে দিয়েছে। রাতে জানালা খুলে রেখে উচ্চস্বরে গানবাজনা করিয়ে ছাত্রীনিবাসের সদস্যরা প্রতিবেশীদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। রবিউল হাসান আরও জানান, তিনি বারবার এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ এসে তদন্ত করে প্রতিপক্ষের পক্ষেই কথা বলে গেছেন এবং তাকে জানিয়েছেন, আপনিও একটি বহুতল ভবন তৈরী করুন। তার অভিযোগ, পুলিশ এ সংক্রান্ত আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় বৃহস্পতিবার এই ঘটনাগুলো ঘটে। তিনি এর প্রতিকার দাবি করেছেন।