অনলাইন ডেস্ক : কার্টুন আঁকার অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে ৩০০ দিন কারাবন্দি থাকার পর কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ছয় মাসের জন্যে কিশোরের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। গত ১ মার্চ কিশোরের জামিন আবেদনের আদেশের জন্যে আজকের দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
এর আগে কিশোরের জামিন আবেদন ছয় বার আদালতে নাকচ হয়েছে।
আদালতে কিশোরের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি কিশোর অসুস্থ। তাকে টর্চার করা হয়েছে। তার ডান কান অকেজো হয়ে গেছে। শুনতে পান না।’
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরওয়ার হোসেন বাপ্পী। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত বলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবীও দেখেছেন। আমরা এখন মেরিটের মধ্যে না গিয়ে, তিনি যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে বন্দি আছেন এবং পুনঃতদন্ত দেওয়া হয়েছে। আপাতত তাকে (কিশোর) ছয় মাসের জন্যে জামিন দেওয়া হলো।
গত বছরের মে মাসে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে রাজধানীর কাকরাইল ও লালমাটিয়া থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। কিশোর ও মুশতাকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রমনা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ কিশোর, মুশতাক ও রাষ্ট্রচিন্তার কর্মী দিদারুল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। পুলিশ জানায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। বাকি সাত আসামি— সাংবাদিক তাসনীম খলিল, সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, জুলকারনাইন সায়ের খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার বিদেশে থাকায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি।
সাইবার ট্রাইব্যুনাল গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পুনঃতদন্তের আদেশ দেন।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) উপপরিদর্শক ও মামলাটির নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আফছর আহমেদ গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এর এক দিন পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি অবস্থায় মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।