নিজস্ব প্রতিনিধি : ঘেরে মাছ চুরির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ জনের প্রত্যেককে পাঁচ বছর তিন মাস সশ্রম কারাদণ্ড, দু’ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান হয়েছে। সোমবার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিাচরক এসএম নুরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীপুর গ্রামের আবু বক্কর গাজীর ছেলে মিন্টু গাজী, একই গ্রামের আকের গাজীর ছেলে আজিজুল গাজী, শওকত সরদারের ছেলে টুকু সরদার, উত্তর শলুয়া গ্রামের মোকাম বিশ্বাসের ছেলে ফারুক বিশ্বাস ও গোদাকাটি গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে রামপদ বিশ্বাস। এদের মধ্যে টুকু সরদার পলাতক রয়েছে। মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাছিয়াড়া গ্রামে মোস্তফা গাজীর একটি মাছের ঘের রয়েছে। মাছিয়াড়া গ্রামের আবুল কাশেম গাজীর ছেলে গফফার গাজীসহ কয়েকজন ওই ঘেরের পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ২০১০ সালের ২৭ মে দিবাগত রাত দু’টোর দিকে মাছ চুরি করে পালানোর সময় আব্দুল গফফার গাজী মোবাইল ফোনে বিষয়টি পার্শ্ববর্তী রায়পুর গ্রামের প্রকাশ ডাক্তারকে জানান। প্রকাশ ডাক্তারের ডাক চিৎকারে মাছ চোর চক্রের সদস্যরা ঘেরের পানিতে পড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। পরে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার নগর শ্রীপুর গ্রামের মিন্টু গাজী, আজিজুল গাজী, উত্তর শলুয়া গ্রামের ফারুক বিশ্বাস ও গোদাকাটি গ্রামের রামপদ বিশ্বাস ও নাছিরপুর গ্রামের আশরাফ বিশ্বাসের েেছলে আবুল কালাম বিশ্বাসকে জনতা আটক করে গণধোলাই দেয়। এ সময় নগর শ্রীরামপুর গ্রামের টুকু সরদার ও তালা উপজেলার মাছিয়াড়া গ্রামের জামারুল গাজীসহ তিন জন পালিয়ে যায়। গণপিটুনিতে মারা যায় আবুল কালাম বিশ্বাস। মাছি চুরির ঘটনায় ঘেরের পাহারাদার আব্দুল গফফার বাদি হয়ে গ্রেপ্তারকৃত চারজনসহ টুকু সরদার ও জামারুল গাজীর নাম উল্লেখ করে ২০১০ সালের ২৮ মে তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তালা থানার উপপরিদর্শক লুৎফর রহমান ওই বছরের ২৮ আগষ্ট এজাহারভুক্ত ছয় জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার ছয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে জামারুল গাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক তাকে বেকসুর খালাস প্রদানের নির্দেশ দেন। পলাতক আসামী টুকু সরদার অভিযোগত্রে উল্লেখিত অপর চার আসামীর বিরুদ্ধে ৩৮২ ধারায় প্রত্যেককে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, দু’ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাস ও ১৪৩ ধারায় প্রত্যেককে তিন মাস করে কারাদণ্ডাদেশ দেন। তবে দুই ধারার সাজা একসাথে চলবে। আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. খান মাহাফুজুর রহমান ও অ্যাড. দীলিপ কুমার মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু।#