নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় ভাই হত্যার বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের ছোট ভাই। বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আশাশুনি উপজেলার লস্করী খাজরা গ্রামের মোঃ অব্দুল মজিদ গাজীর ছেলে মোঃ আরিফুল ইসলাম এই দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, প্রায় এক বছর আমার আমার জমজ ভাই শরিফুল ইসলামের সাথে একই এলাকার রফিকুল গাজী ওরফে রফি’র মেয়ে মোছাঃ ফাতেমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই তাদের দাম্পত্য বিবাদ শুরু হয়। এ বিবাদে ভাইয়ের নানী শাশুড়ি ও শ^াশুড়ির উস্কানি ছিলো। ফলে তাদের বিরোধ ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। কিছুদিন পর ভাবীর বাবা রফি, মা মর্জিনা খাতুন ও নানী নুর জাহান বিবি আমাদের বাড়িতে থেকে ভাবী ফাতেমা কে নিয়ে যায়। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ভাবী ফোন করে ভাই শরিফুলকে ডাকলে সে কাউকে না জানিয়ে শ^শুর বাড়ি চলে যায়। ওই রাতেই তার শশুর রফি আমার চাচা আব্দুল আজিজকে ফোন করে বলে তোমাদের ছেলেকে নিয়ে যাও। কিন্তু গভীর রাত হওয়ায় চাচা যেতে অস্বীকৃতি জানালে রফি বলে কোন অঘটন ঘটলে কিন্তু দায় আমরা নিতে পারবো না। পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে আমার মা তাকে খুজতে গিয়ে আমাদের ঘেরের বাসায় ভাই শরিফুলের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, লাশের গলায় চিকন লাইলনের দড়ির দাগ দেখলেও ঝুলে ছিল একটি মোটা লাইলনের দড়িতে। এছাড়া যেখানে ঝুলানো ছিল তার নিচেই একটি খাট ছিল। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব। তারা আমার ভাইকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে প্রচার দিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করতে থাকে। এঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে ভাবীর পিতা রফিকুল গাজী ওরফে রাফি, মাতা মর্জিনা খাতুন, নানী নুর জাহান বিবি, ভাবী ফাতেমা ও ভাবির খালু শাহারুল গাইনকে আসামী করে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলার ৩ ও ৫ নং আসামী গ্রেপ্তার হলেও ৩নং আসামী ইতিমধ্যে জামিনে পেয়েছে। বাকি অসামীরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। ফলে মামলায় কিছু হবে না বলে তারা প্রকাশ্যে আস্ফালন করে বেড়াচ্ছে। আসামীরা বৃত্তবান হওয়ায় কৌশলে পার পেয়ে যাওয়ার পায়তারা করছে। তিনি আরো বলেন, মামলাটি আশাশুনি থানার ওসি নিজেই তদন্ত করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, ভিকটিম শরিফুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে লাশ মৎস্য ঘেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এটি নৃশংস হত্যাকান্ড। এছাড়াও এখনো পর্যন্ত ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। এটি নিয়েও আমরা হতাশার মধ্যে রয়েছি। তিনি দ্রুত ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেতে এবং হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের পিতা আব্দুল মজিদ গাজী, মাতা সালমা খাতুন, মামা সাইদুল ইসলাম ও চাচা আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন।