অনলাইন ডেস্ক : করোনাভাইরাস, এইচআইভি ও রক্তসহ নানা ধরনের পরীক্ষার রি-এজেন্ট, কিট এবং অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস জব্দ করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র্যাব)। জব্দকৃত এসব অবৈধ মালামাল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমদানি, মজুত ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বাজারজাত করে আসছে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বসিলাতে র্যাব–২–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শামীম মোল্লা (৪০), ব্যবস্থাপক মো. শহীদুল আলম (৪২), প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকী ছাব্বির (২৪), অফিস সহকারী মো. জিয়াউর রহমান (৩৫), হিসাবরক্ষক মো. সুমন (৩৫), অফিস ক্লার্ক ও মার্কেটিং অফিসার জাহিদুল আমিন পুলক (২৭), সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল রানা (২৮), এক্সন টেকনোলজিস্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মো. মাহমুদুল হাসান (৪০), হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের এমডি এস এম মোজফা কামাল (৪৮)।
ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি, কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান অনুমোদনহীন মেডিকেল ডিভাইস আমদানি, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ করোনার টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্টসহ অন্যান্য রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন রোগের টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট মজুত এবং বাজারজাত করছে। গতকাল বিকেল থেকে আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর লালমাটিয়ায় বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান বনানীর হাইটেক হেলথ কেয়ার ও এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডে অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোট চার ট্রাক পণ্য জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, প্রতিষ্ঠান তিনটি ২০১০ সাল থেকে একাধিক নামে সংগঠিত হয়ে পারস্পরিক যোগসাজশে অবৈধভাবে ও অসৎ পন্থায় আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে স্বল্প মূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি, মজুত ও বাজারজাত করত। এসব নকল টেস্ট কিটগুলো সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করত চক্রটি। এসব পণ্য তারা বিদেশ থেকে কম মূল্যে ক্রয় করে অনেক চড়া দামে বিক্রি করত। এসব পণ্যের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটও পাওয়া গেছে।
র্যাব অধিনায়ক ইমরান বলেন, এসব রি-এজেন্ট বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোনো অনুমতি দেয়নি। আর অধিকাংশ পণ্যের গায়ে মেয়াদ ছিল না। নিজের মতো করে স্টিকার লাগিয়ে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এসব পণ্য কাদের কাছে সরবরাহ করা হত, কাদের কাছে বিক্রি করত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও কারা কারা জড়িত আছে তাদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের দুই মূল হোতা ও বাকি দুই প্রতিষ্ঠানের আরও দুই মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযানে গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের ভেতর ও বাইরে থেকে সাজানো অবস্থায় এসব পণ্য রি-এজেন্ট ও কিট জব্দ করা হয়। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কিছু ছিল যা মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার অনেকগুলো টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।