পর্নো ছবির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি প্রেমের সম্পর্ক থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখে। শুধু তা-ই নয়, এই আসক্তি এতটাই ভয়ংকর যে এতে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয় এবং প্রেমিকার কাছে নিজেকে তাচ্ছিল্যের পাত্র বলে মনে হয়। এটা কিছুটা পুরোনো গবেষণা। তবে এবার নতুন গবেষণা বলছে, পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তির কারণে পুরুষদের জননতন্ত্রের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে কেউ নপুংসক হয়ে যেতে পারেন।
আমেরিকান ইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক গবেষণায় এ ফল পাওয়া গেছে বলে গবেষকেরা দাবি করেছেন।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণা প্রতিবেদনটি গত ১২ মে আমেরিকান ইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের ১১২তম বৈজ্ঞানিক সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। গবেষকেরা ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী তিন শতাধিক পুরুষ যাঁরা সান দিয়েগো ইউরোলজি ক্লিনিকে জননতন্ত্রের চিকিৎসা নিয়েছেন তাঁদের ওপর এই গবেষণাটি করেছেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত পুরুষেরা পর্নো দেখে যতটা উপভোগ করেন, বাস্তবে শারীরিক সংসর্গের সময় তাঁরা ততটা উপভোগ করতে পারেন না।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপ চালানো তিন শতাধিক পুরুষের মধ্যে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ পর্নো দেখে নিয়মিত স্বমেহন করার পর শারীরিক সংসর্গ করেন। প্রতি চারজনে একজন বলেছেন, তাঁরা সপ্তাহে অন্তত একবার পর্নো দেখেন। আর ২১ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, তাঁরা সপ্তাহে তিন থেকে পাঁচবার দেখেন। সপ্তাহে ছয় থেকে ১০ বার দেখেন পাঁচ শতাংশ পুরুষ এবং ৪ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ সপ্তাহে ১১ বারের বেশি পর্নো দেখেন।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির পুরুষ প্রজনন স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ও ইউরোলজির অধ্যাপক জোসেফ অ্যালুকাল বলেন, স্ক্রিনে দেখা উদ্দীপক কখনো কখনো নারী ও পুরুষের যৌন উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় ঠিকই। কিন্তু যদি কেউ পর্নোগ্রাফিতে মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করেন এবং নিয়মিত স্বমেহন করেন তাহলে বাস্তব জীবনে তিনি শারীরিক সংসর্গে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
জোসেফ অ্যালুকাল বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের সমস্যা নারীদের ক্ষেত্রে খুব কমই ঘটে। আর এতে পুরুষদের জননতন্ত্রের কার্যক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে—যৌনতা শুধু শারীরিক ব্যাপার নয়, এটা মানসিক ব্যাপারও বটে।
সান দিয়েগোর নাভাল মেডিকেল সেন্টারের ইউরোলজিস্ট ম্যাথিউ ক্রিস্টমান বলেন, পর্নো ছবির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তিতে পুরুষদের প্রজননতন্ত্রের কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার সমূহ ঝুঁকি থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, একজন পুরুষ শারীরিক সংসর্গের সময় যতটা উত্তেজিত থাকেন, পর্নো দেখার সময় তার চেয়ে বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আর কারণেই তা সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় প্রজননতন্ত্রের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যদিও ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সী পুরুষদের এই সমস্যা এমনিই হতে পারে।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গবেষকেরা ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারী যাঁরা পর্নো ছবি দেখায় আসক্ত, তাঁদের ওপরও জরিপ চালিয়েছেন। তবে এ ক্ষেত্রে তাঁদের প্রজননতন্ত্রের কার্যক্ষমতা হ্রাস হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।