খেলা

বিনিয়োগে বিশ্বের নজর এখন এশিয়ার ক্রীড়াঙ্গন

By Daily Satkhira

May 21, 2017

গত মার্চে ‘টেক ইন এশিয়া’ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দৃষ্টি ই-কমার্স থেকে অন্যান্য দিকে ঘুরে যাচ্ছে। নতুন যেসব ক্ষেত্রে ব্যবসা সরে যাচ্ছে সেই তালিকার প্রথমেই রয়েছে সম্ভবত ক্রীড়াক্ষেত্র।

এর মানে এই নয় যে এখনো ক্রীড়াক্ষেত্র কম লাভজনক। ২০১৫ সালে এশিয়া-প্যাসিফিকের ক্রীড়া সংস্থার মোট রাজস্ব আয় ছিল ২৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি একটি উল্লেখযোগ্য বাজার; যা মিডিয়া এবং স্পন্সরদের মনোযোগ সৃষ্টি করে। সেইসঙ্গে এই শিল্প পোশাক বিক্রয় থেকে শুরু করে ক্রীড়াবিদ্যা অর্জন ও অন্যান্য বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

স্পোর্টস মানুষের চিন্তার চেয়েও বেশি বিচিত্রমুখী হতে পারে। এখানে কোচিং থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয় বিশ্লেষণের সুযোগ রয়েছে। আর এটা এশিয়াতেও হতে পারে। এই ধারণাগুলোর উপর ভিত্তি করেই ক্রীড়াপ্রযুক্তি শিল্প চালিত হচ্ছে এবং সারাবিশ্বের খেলাধুলার পারফরম্যান্সের উন্নতিই এর মোক্ষম উত্তর।

ক্রীড়া সামগ্রীর উৎপাদন ও বিপণনের অন্যতম প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। যারা শুধু ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকাকে টার্গেট করেই বিনিয়োগ করেছিল। তারা এখন এশিয়াতেও নজর দিয়েছে। এই কাজের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডি ডাসলার একটি নতুন খসড়াও দাঁড় করিয়েছেন। বার্লিন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, তারা তাদের প্রসারণকে দ্রুততর করতে চায়। তবে এমনটা তাদের প্রথম নয়, বরং ইউরোপেও ব্যবসা বিস্তারে পণ্যের মান বৃদ্ধি করতে চায় তারা।

একটা সময় ছিল যখন ক্রীড়াঙ্গনে প্রযুক্তির ব্যবহার তেমন ছিল না। কিন্তু এখন সেটা পাল্টেছে। বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ক্রীড়াঙ্গনে প্রযুক্তির ব্যবহার বহুগুণে বেড়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলেছে। এর ব্যবহারে অ্যাথলেটদের ইনজুরি কমিয়ে কর্মক্ষমতা বাড়িয়েছে।

ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার, মনোযোগ আকর্ষণের কায়দা বা চাতুরীর চেয়ে আরও বেশি কিছু। ‘টেক ইন এশিয়া’র প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাস্কেটবলের খেলোয়াড় কোবি ব্রায়েন্ট ও স্টিফেন কারিরা বিজ্ঞাপনের চেয়ে জুতা পায়ে খেলা বা অনুশীলনে বেশি উপকৃত হয়েছেন।

এশিয়ার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্র ক্রমবর্ধমান ভাবে বাড়ছে। চীন, ভারত, সাউথ কোরিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মতো দেশে ক্রীড়াক্ষেত্রে ইনজুরি আঘাত বাড়ছে। তাতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্রীড়াঙ্গনে ওষুধ শিল্পের বাজার ৯.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

যদিও নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী স্পোর্টস ব্র্যান্ডের নাম রয়েছে, তবে পূর্ব এশিয়ায়ও শক্তিশালী ফ্যান সংস্কৃতি রয়েছে- বিশেষ করে বেসবলের মত খেলায় সেটা দেখা যায়। জাপান, কোরিয়া এবং তাইওয়ান তো বেসবলকে তাদের ‘জাতীয় চিত্তবিনোদন’ হিসেবে দেখে। তাদের সমর্থকরাও মাঠে সেটা ভালভাবে প্রমাণ করে।

শুধু পুরুষ নয়, এশিয়াতে নারী ক্রীড়াবিদের সংখ্যাটাও বাড়ছে চোখে পড়ার মত হারে। সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ভারত ও ইন্দোনেশিয়াতে অর্ধেকেরও বেশি নারী তাদের ব্যয় করে খেলাধুলার পণ্য-সামগ্রী ক্রয়ের পেছনে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভারতের ক্রীড়াঙ্গনে লিঙ্গ বৈষম্য সবচেয়ে কম।

এটি কোনও আশ্চর্য হওয়ার মতো বিষয় নয় যে, সামাজিক মাধ্যম এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এশিয়ায় অর্থায়ন করতে চাচ্ছে। ক্রিকেটের বাইরেও এখানে প্রচুর বিনিয়োগ হচ্ছে। ভারতের মুম্বাই ভিত্তিক বিভিন্ন কোম্পানি ফুটবল, টেনিস এবং বাস্কেটবলেও অনেক বিনিয়োগ করছে। কাজ হচ্ছে ফর্মুলা ওয়ান নিয়েও।

আর চলতি বছর সিঙ্গাপুর ভিত্তিক স্পোর্টহিরো গ্রুপ তো ক্রীড়াক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগ ২.৫ মিলিয়ন বাড়িয়েছে। আর মার্কিন জায়ান্ট কোম্পানি রেজার মোট যে ১৪টি স্পোর্টস টিমকে স্পন্সর করে তার ৬টিই এশিয়ার।