সাতক্ষীরা

১০ দফা দাবিতে জেলা নাগরিক কমিটির মানবন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি পেশ

By daily satkhira

May 22, 2017

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত মোটর ভ্যান, নসিমন , করিমন, আলমসাধু আটকের অভিযানের প্রতিবাদ, ভূমিহীন ও মৎস্যজীবীদের মধ্যে সরকারি খাস জমি ও জলমহল ইজারা প্রদান, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সামনে শিক্ষার পরিবেশ বিঘœকারি বাইপাস সড়কের সংযোগ ও পশ্চিম পাশে ট্রাক টার্মিনাল বন্ধসহ ১০দফা দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ টায় জেলা নাগরিক কমিটি সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক স্মারকলিপি প্রদান করে। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমাণ্ডের সভাপতি মোশারফ হোসেন মশু, জেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, নাগরিক কমিটির সদস্য আনোয়ার জাহিদ তপন, সাবেক অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালিদুর রহমান, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাতক্ষীরা জেলা শাখার সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জেলা রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ঐক্য সমন্বয় পরিষদের আহবায়ক অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু, গণফোরমের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাংগঠণিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের একাংশের সভাপতি সুধাংশু শেখর সরকার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমাণ্ডের সাধারণ সম্পাদক লায়লা পারভিন সেজুতি, স্বদেশ এর নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের একাংশের সমন্বায়ক নিত্যানন্দ সরকার, রিক্সা ভ্যান শ্রমিক নেতা রেজাউল ইসলাম, মোমিন হাওলাদার, হাবিবুর রহমান মিলন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গত ১৫ মে থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন আটক করে তাদের রুটি রুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ ছাড়া স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সকলকে আগের ভাড়ার তুলনায় তিনগুন খরচ করে পায়ে চালিত ভ্যান, ইজিবাইক বা ইজিবাইকে করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। অনেক সময় শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওইসব যানবাহন যেতে অপারগতা প্রকাশ করায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাই ব্যাটারি চালিত ভ্যান, ইঞ্জিন চালিত ভ্যান, নসিমন, করিমনসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে বিকল্প যানবাহন ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। গত এক সপ্তাহে পুলিশের অভিযানে আটককৃত ওইসব যানবাহন তাদের প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া পৌরসভার বাইরে ওইসব যানবাহন চলাচলের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা না রাখার আহবান জানান বক্তারা। তবে যানবাহন ধরার পর ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের ব্যাপক অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ করা হয়। বিদ্যুতের তীব্র লোডশেডিং এর প্রতিকারের আবেদন জানান বক্তারা। দুপুর ১২টায় মানববন্ধন শেষে অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলুর নেতৃত্বে একটি মিছিল সাতক্ষীরা কালেক্টরেট অফিসে যাওয়ার সময় সদর থানার সামনে পুলিশ তা আটকে দেয়। একপর্যায়ে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এক স্মারকলিপি পেশ করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক বিদ্যুতের সমস্যা শুধুমাত্র সাতক্ষীরার সমস্যা নয়,একটি বৃহত্তর সমস্যা উল্লেখ করে সমস্যা সমধানে কি কি কাজ করা হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দেন। সাতক্ষীরাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সুন্দর করে গড়ে তুলতে ব্যাটারি ভ্যানের পরিবর্তে রিক্সা প্রচলনে উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। নাভারন থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন নির্মানের কাজ, ২০১০ সালে যেভাবে বাইপাস সড়কের নক্সা করা হয়েছিল সেভাবেই কাজ চলছে বলে জানান। তবে প্রয়োজনে বাইপাস সড়কের নক্সার পরিবর্তন আনতে স্থানীয় সাংসদের নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন। তবে সাতক্ষীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ভোমরা বন্দরকে পূর্ণাঙ্গবন্দরে রুপান্তর ও সকল ধরণের পণ্য এ বন্দর দিয়ে আমদানি ও রপ্তানির বিষয়টি আলোচিত হয়। সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটন শিল্পের বিকাশ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বেতনা, প্রাণসায়র, মরিচ্চাপ, সাপমারা, লাবণ্যবতীসহ সকল নদী ও খাল খনন করে জোয়ার ভাটা চালুর স্বপক্ষে যশোরের ঠিকাদারদের আধিপত্য থাকায় কিছুটা সমস্যার কথা তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া জেলার খারাপ হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট মেরামত ও মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গ রুপে চালু করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসক উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন।