দেবহাটা

দেবহাটায় লম্পট শিক্ষক ভোলা মাস্টরের কাণ্ড!

By Daily Satkhira

May 22, 2017

কেএম রেজাউল করিম : বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। বছরের প্রথম দিন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তার পাশাপাশি প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এমনকি ঝরে পড়া শিশুর সংখ্যাও একেবারে কমে দাঁড়িয়েছে। সবমিলে শিক্ষায় এক নব জোয়ার লেগেছে। আর ঠিক সেই সময়ে কতিপয় কিছু ব্যক্তির কারণে আজ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তেমনি একটি ঘটনা যেটি ঘটনা ঘটেছে দেবহাটার সূবর্ণাবাদ গ্রামে। সেখানে এক লম্পট শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকা-ে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। দিনে দিনে তার অসামাজিক কর্মকা-ে এলাকাজুড়ে ছি ছি পড়ে গেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সূবর্ণাবাদ গ্রামের গুরু চরণ মন্ডলের পুত্র ভোলা মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসা ছাত্রীদের ফুঁসলিয়ে তাদের সাথে অনৈতিক কর্মকা-ে লিপ্ত হয়। সাম্প্রতিক তার এই কর্মকা- সমাজের মানুষের কাছে প্রকাশ হলে উঠতি বয়সের ছাত্রীরা তার কাছ থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছে। কিন্তু তার এই জঘন্যতম কর্মকা-ের শিকার হয় ২য় শ্রেণির ছাত্রী থেকে বিভিন্ন বয়সী ছাত্রীরা। ২য় শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, ভোলা মাস্টার তাকে একটি ভিডিও (পর্নগ্রাফি)দেখায়। ভিডিও তে যা যা করেছে তাকে তাই করতে বলে। এমনকি লম্পট ভোলার যৌন অঙ্গে হাত দিতে বলে। অপরদিকে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক আরও এক ছাত্রী জানায়, ভোলা তাকেও ভিডিও দেখিয়ে সেখানে যা যা আছে তাকে তাই করতে বলে। তাকে বলে আগামি বছরে তো তোকে বিয়ে দেব। তুই তো অনেক রোগা। তুই যদি আমার সাথে এ কাজ করিস তাহলে তোর শরীর ভালো হবে, স্বামীর কাছে অনেক আদর পাবি। তাছাড়া একাজ করলে আমি তোকে টাকা দেব। তুই টাকা দিয়ে ছাদে বসে দই কিনে খেতে পারবি। সম্প্রতি এক ছাত্রী ভোলার কাছে পড়তে গেলে ভোলা জোরপূর্বক খাটে ফেলে শরীরের বিভিন্ন স্পার্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ওই ছাত্রী কোনরকমে ভোলার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে চিৎকার করতে থাকলে ভোলা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে ছাত্রীর মা’র সাথে বললে তিনি ভোলার বাড়িতে গিয়ে নালিশ জানান। তবে এতে কোন ফল পাননি। পরে বিষয়টি সাংবাদকর্মীদের কাছে পৌঁছালে তারা মেয়েটির বাড়িতে গেলে সহযোগিতা চেয়ে তিনি কান্ন্ায় ভেঙে পড়ে। পরে ভোলার বাড়িতে পৌঁছলে তার স্ত্রী আগে থেকে টের পেয়ে তাকে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। তার স্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি স্বামীর কাজে সাহায্যে করেন কিনা জানতে চাইলে বিভিন্নভাবে এড়িয়ে যান। এবিষয়ে ভোলার সাথে পরবর্তিতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সংবাদকর্মীদের দেখে পালিয়ে যাওয়ার কথা জানতে চাইলে বলেন, ভয়ে পালিয়েছেন তিনি। তবে তিনি সংবাদকর্মীদের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ম্যানেজ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য অচিন্তকে দিয়ে চেষ্টা চালান। এঘটনায় দেবহাটা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ন্যাক্কারজনক। তবে আমি এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। তবে দোষির শাস্তির হবে। শিক্ষা জাতির মেরুদ- আর শিক্ষক হলেন পরম শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু শিক্ষক যখন এমন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে তখন সমাজের সাধারণ মানুষের ঠাঁই কোথায়Ñ এমন প্রশ্ন গোটা সূবর্ণাবাদ এলাকাবাসীর। তাদের একটাই দাবি এমন লম্পট চরিত্রহীন শিক্ষকের উপযুক্ত শাস্তি। যাতে আর কোন শিক্ষক এমন জঘন্য কাজ না করেন। এ বিষয়ে এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।