নিজস্ব প্রতিনিধি : উপকূলীয় টেকসই বেড়িবাঁধ ও জলবায়ু প্রকল্পের ন্যায্য দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা শহরের মিনিমার্কেটস্থ শহিদ নাজমুল সরণীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মহিবুল্লাহ মোড়ল।
মানুষ বাঁচাও, পরিবেশ বাঁচাও, সম্পদ বাঁচাও শ্লোগানের অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুল হক কিসলু, মন্ডলীর অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী আবেদুর রহমান, আব্দুর রউফ, নারী নেত্রী নাছরিন খান লিপি, সরদার রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য স্বপন কুমার শীল।
বক্তারা বলেন, অবহেলিত সাতক্ষীরার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল। এ অঞ্চলে প্রতিবছর ঝড়,জলোচ্ছ্বাস, বন্যায় ভেঙে পড়ে উপকূলীয় বাঁধ। পানিতে তলিয়ে যায় হাজার হাজার হেক্টর জমি, ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে, হাজার হাজার মৎস্যঘের ভেসে যায়, ফসল নষ্ট হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্ফান’র ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই গত ২৮ মে ২১ খ্রিঃ ইয়াসের ঝড়ে, জোয়ারে শ্যামনগর,আশাশুনি, দেবহাটা,কালিগন্ঞ্জ উপজেলার খোলপেটুয়া, ইছামতী, কালিন্দী, কাকশিয়ালী’র ২৪ টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙেছে এবং ৫৫ টি স্থানে বেড়িবাঁধ ওভার ফ্লো হয়ে ২৭ টি ইউনিয়ন র ১২০ টি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ১০০০০( দশ হাজার)র মতো ঘরবাড়ি ক্ষতগ্রস্ত হয়েছে, ৩৫০০০ (পয়ত্রিশ হাজার) পরিবারের ১,৫০,০০০ (একলক্ষ পঞ্চাশ হাজার) মানুষ এখনো পানিবন্দি রয়েছে। সরকারি তথ্যমতে ৪টি উপজেলায় ৬৭৩৮ হেক্টর জমিতে ৭৫৬০টি চিংড়ীঘের ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার অর্থনৈতিকভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রতিবছর মৎস্য খাত, সুন্দরবন, ভোমরা স্থলবন্দর, বৈদেশিক রেমিটেন্স সহ বিভিন্ন খাত থেকে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রদান করে থাকে। কিন্তু সরকার দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের দুর্যোগ -কবলিত অসহায় মানুষের দীর্ঘদিনের টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি পুরণ হয়না। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে “মেরিন প্রকল্পের” আওতায় টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মান কার্যক্রম গ্রহন করলেও উপকূল অঞ্চল হিসেবে সাতক্ষীরা বার বার প্রাকৃতিক দূর্যোগে (ঘূর্ণিঝড় ও টর্ণেডো) প্লাবিত হলেও টেকসই বেড়ীবাঁধ করা হচ্ছে না। বৈষয়ীক উষ্ণতার কারনে “জলবায়ু প্রকল্প” এর নামে ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সরকার গ্রহন করেছে। যার বরাদ্দ বন্টন হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়, ক্ষতি গ্রস্থ অঞ্চল বিবেচনায় নয়। সে কারনে মানববন্ধনে বাজেটে জলবায়ু প্রকল্পের ন্যায্য বরাদ্দ, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান, কর্মসংস্থানে জন্য অর্থনৈতিক জোন, ট্রেনলাইন, সুন্দরবনকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেটে অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলা হয়। সাতক্ষীরা দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ও ঝুকিপূর্ণ এলাকার চিহ্নিত করে কাজ করার আহ্বান জানান এবং এ অঞ্চরে পর্যাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার ও দূর্যোগ কবলিত মানুষের জনগণের নিরাপত্তা দিতে হবে। উপকূলীয় মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে, জানমাল রক্ষায় কার্যকর অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে, সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।