জৈষ্ঠ্যের তীব্র তাপদাহে ওষ্ঠাগত নাগরিক জীবন। অতিষ্ঠ সারাদেশের মানুষ। সবার মনে প্রশ্ন কেন বৃষ্টি নামে না? কবে নামবে বৃষ্টি? তবে প্রত্যাশা যতই থাকুক জনমনে, সবাইকে হতাশ করে আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এ সপ্তাহে বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনাই নেই। ব্যতিক্রম হতে পারে কেবল চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুর, নওগাঁ ও এর আশেপাশের এলাকাগুলো। এসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, আজ মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নিলফামারীর ডিমলায় হলেও ব্যবধান খুব বেশি নয়, সেখানেও ছিল আজ ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের রোদ পোড়া গরম।
কেন এসময় বৃষ্টি নেই এই প্রশ্নটি করা হয় আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিনের কাছে। তিনি বলেন, সাধারণত বৃষ্টি হয় তখনই, যখন বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে। সেই মেঘ ভারি হয়ে আকাশ ঝেঁপে বৃষ্টি নামায়। বাংলাদেশের বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হতে হলে পশ্চিম দিক থেকে আসা লঘুচাপটির বাইরের অংশকে (পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ) অনেক বেশি সক্রিয় থাকতে হয়। কিন্তু, বর্তমানে সে রকম পরিস্থিতি নেই। তাই আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
আফতাব উদ্দিন বলেন, আগামী তিন চার দিনের মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিন চার দিন পর হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে, তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। আগামী মাসের শুরুতে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তখন তাপমাত্রা কমে আসবে।
এদিকে প্রচণ্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠে গেছে নাগরিক জীবনে। যদিও আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য মতে, সারাদেশে বইছে মৃদু তাপদাহ—যা কিনা বিগত দু’বছরের তুলনায় কম। এ প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন বলেন, এপ্রিল-মে মাসে স্বাভাবিক নিয়মেই তাপমাত্রা বেশি থাকে।
তাপদাহের মাত্রা নির্ধারণের পদ্ধতিও বাতলে দেন তিনি। তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে তাকে বলে মৃদু তাপদাহ, আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটি মাঝারি তাপদাহ। এর ওপরে অর্থাৎ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা উঠলে সেটিকে বলে তীব্র তাপদাহ।
আফতাব উদ্দিন জানান, বর্তমানে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি, তাই অস্বস্তিবোধ বেশি হচ্ছে। গত দুই বছরের এই সময়ের তাপমাত্রা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও তাপমাত্রা গড়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। এবছরের তাপমাত্রা এখনও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত যায়নি।