প্রচণ্ড রোদে বের হয়েছেন অফিসে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। একটুর জন্য বাস মিস, তাই হেঁটেই রওনা দিয়েছেন। কিছুক্ষণ হাঁটার পরেই অনুভব করলেন মাথা ঝিম ঝিম করছে এবং শরীর খুব দুর্বল লাগছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখে ঝাপসা দেখা শুরু হলো। এরপর… আর কিছু মনে নেই। ঘটনাটি হিট স্ট্রোকের। আপনার কিংবা পরিবারের কেউ হয়তো এখনো আক্রান্ত হননি, তবে যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারেন। তাই প্রয়োজন সাবধানতার।
দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ফারেনহাইট। যদি দেহের তাপমাত্রা ১০৪ ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায় তখনই হিট স্ট্রোক হতে পারে। রোগীকে সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে মৃত্যুও হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের দেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হলো চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি করা, অবসাদ, দুর্বলতা, মাথাব্যথা, ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, মাংসপেশির খিঁচুনি, পালস বেড়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া ইত্যাদি। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না নিলে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
কী করবেন হিট স্ট্রোক হলে?
- রোগীকে ছায়ায় নিয়ে যেতে হবে। যদি সম্ভব হয়, ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন, নয়তো বাতাস করতে হবে।
- সমতল স্থানে শুইয়ে দিতে হবে।
- পা উপরে তুলে দিতে হবে।
- ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। সম্ভব হলে কাঁধে, বগলে ও কুচকিতে বরফ দিতে হবে।
- প্রচুর পানি, পানীয় ও খাবার স্যালাইন পান করাতে হবে।
- রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
- খেয়াল করতে হবে হিট স্ট্রোকে অজ্ঞান রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস এবং নাড়ি চলছে কিনা। না হলে, কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
হিট স্ট্রোক এড়াতে করণীয়
- প্রয়োজন ছাড়া রোদে বের হওয়া উচিত নয়।
- হাঁটার সময় ছায়ার পথে হাঁটুন অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করবেন।
- ঢিলেঢালা হালকা রঙের সুতি পোশাক পরুন।
- প্রস্রাবের রং খেয়াল করুন। প্রস্রাব গাড় রঙের হলে পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
- প্রচুর পানি, ডাবের পানি ও ফলের রস পান করুন। ঘামের সাথে দেহের লবণ বেড়িয়ে যায়। লবণের মাত্রা ঠিক রাখতে সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। চা ও কফি এড়িয়ে চলুন। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া