জাতীয়

‘ফরমালিনের নামে আম ধ্বংস করা ছিল ভুল’

By Daily Satkhira

May 24, 2017

ফরমালিন ব্যবহারের ভুল ধারণার কারণে ২০১৩ সালে প্রচুর পরিমাণে আম ধ্বংস করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ডাই প্রকল্পের টিম লিডার মো. শোয়েব চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ফরমালিন ব্যবহার নিয়ে কিছু ভুল ধারণা ছিল। ওই কারণেই ২০১৩ সালে প্রচুর পরিমাণে আম ধ্বংস করা হয়েছিল। ওই সময় আমে ফরমালিনের উপস্থিতি শনাক্ত করার যন্ত্রগুলোও ঠিক ছিল না। ফলে ফরমালিনের নামে আম ধ্বংস করা ছিল ভুল।’

বুধবার (২৪ মে) ঢাকা চেম্বারে আমের বাজারজাতকরণে নীতি সহায়ক পরিবেশ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় শোয়েব চৌধুরী এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং ইউএসএআইডি’র এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইনস (এভিসি) প্রজেক্ট যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশে আম পাকানোর জন্য ফরমালিন ব্যবহার করা হয় না বলে জানান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্যানবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ‘আম পাকানো এবং সংরক্ষণে ফরমালিন কোনও কাজেই আসে না। বরং প্রাকৃতিকগতভাবেই আমে ১.২২ থেকে ৩.০৮ পিপিএম পরিমাণে ফরমালিন থাকে, যা আমকে পাকতে সাহায্য করে।’

বিপরীতে আম পাকাতে ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার প্রসঙ্গে আব্দুর রহিম বলেন, ‘দেশে ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও কিছু অসৎ ব্যবসায়ী আম পাকাতে এটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।’ বরং আম পাকানোর জন্য ২শ থেকে এক হাজার পিপিএম পরিমাণ ইথিফোনের ব্যবহার নিরাপদ বলে জানান তিনি।

বিশ্বে আম উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম এবং বাংলাদেশে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার আমের বাজার রয়েছে। এ তথ্য উল্লেখ করে ড. আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের দেশে সঠিক সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থার অভাবে আহরণের পর প্রায় ৩৩ ভাগ আমই নষ্ট হয়ে যায়।’ বরং বর্তমানে কৃষি পণ্য চাষাবাদে কীটনাশকের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় প্রধান অতিথি মুন্সী শফিউল হক বলেন, ‘জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আম চাষীদের আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার ফলে রাজশাহীর পর সাতক্ষীরাতেও বিস্তৃত পরিসরে আমের উৎপাদন হচ্ছে।’ তিনি আমচাষীদের কীটনাশক ব্যবহারের সচেতন করার কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ডিসিসিআই’র মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির বলেন, ‘প্রতিটি নাগরিকের পণ্য কেনায় ব্যবহৃত অর্থের মূল্য রয়েছে। তাই ভোক্তা পর্যায়ে আমের গুণগত মান নিশ্চিত করা আবশ্যক।’ তিনি বলেন, ‘আমে ফরমালিন বা কার্বাইড ব্যবহার না করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হতে হবে।’

আলোচনায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এ হাশেম, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. জাকির হোসেন অংশগ্রহণ করেন।