জাতীয়

হুমায়ুনের চিত্রকর্ম চুরি : শাওনের মামলায় বিশ্বজিৎ সাহার জবাব

By Daily Satkhira

July 01, 2021

সাহিত্য ও সংস্কৃতি : নির্মাতা ও নন্দিত কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের চিত্রকর্ম আত্মসাতের অভিযোগে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন মামলায় যে অভিযোগ তুলেছেন তা সত্য নয় বলে জানিয়েছেন অভিযুক্তদের একজন। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ সাহা। তিনি ও তার সাবেক স্ত্রী রুমা চৌধুরী হুমায়ূন আহমেদের চিত্রকর্ম আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ তুলে শাওন মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন।

তবে এবার শাওনের অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো শাওনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছেন বিশ্বজিৎ সাহা।

গণমাধ্যমে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে নিউইয়র্ক মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের কোনো চিত্রকর্মের প্রদর্শনী বা তার কোনো চিত্রকর্ম চুরি হওয়ার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তার ২৪টি চিত্রকর্মের মধ্যে ২০টি হুমায়ূন আহমেদের মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছি ২০১৩ সালে। একটি ছবি মেলার স্থান থেকে হারিয়ে যায়। যা জ্যামাইকার পুলিশ প্রিসিংকট জিডি করে, তাও হুমায়ূন আহেমদ এর মায়ের কাছে হস্তান্তর করি। হারিয়ে যাওয়া ছবি যদি কেউ কোথাও প্রদর্শনী করে সেই দায়ভার আমার না। যিনি এটি প্রদর্শন করেছেন তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। বাকি তিনটির মধ্যে একটি চিত্রকর্ম হুমায়ূন আহমেদ জাতিসংঘে নিযুক্ত তৎকালীন স্থায়ী প্রতিনিধি বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেনকে উপহার দেন। আরেকটি নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন কার্যালয়কে উপহার দেন এই কথাশিল্পী নিজ হাতে। সর্বশেষ অর্থ্যাৎ, ২৪ নম্বর চিত্রকর্মটি হুমায়ূন আহমেদ উপহার দেন নিউইয়র্কে নিযুক্ত তৎকালীন বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাব্বির আহমেদকে।’

বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের আাঁকা ছবি আত্মসাতের অভিযোগে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাওন মামলা করায় আমি অবাক হইনি। অবাক হইনি মামলার নথিপত্রে তার মিথ্যাচার দেখেও। শাওন অভিযোগ করেছেন, ‌‌২০১২ সালে চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় থাকাকালে অবসরে হুমায়ূন আহমেদ বেশ কিছু ছবি আঁকেন। সে সময়েই নাকি তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়!

বিশ্বজিত সাহা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কখন থেকে আমার পরিচয় তা শাওনের জানার কথা নয়। ১৯৯৪ সাল থেকে যতবার হুমায়ূন আহমেদ নিউইয়র্কে এসেছেন, প্রধানত আমার সাংগঠনিক উদ্যোগে মুক্তধারা নিউইয়র্ক ও নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলাকে ঘিরেই ছিল তার সকল আনন্দ-উদ্‌যাপন। শাওনের সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের পরিচয়েরও অনেক আগের ঘটনা সেটা। ১৯৮৫ সালে আমি যখন মোস্তফা জব্বার (বর্তমানে মন্ত্রী) সম্পাদিত সাপ্তাহিক আননন্দপত্রে কাজ করি, তখন থেকেই হুমায়ূন আহমেদের সাথে আমার সম্পর্ক গড়ে উঠে।’

বিশ্বজিৎ সাহা আরও বলেন, ‘এ কথাও শাওনের জানা যে, চিকিৎসা নিতে নিউইয়র্কে এসে হুমায়ূন আহমেদ আমারই তত্ত্বাবধানে ছিলেন। বেঁচে থাকা অবস্থায় স্বজ্ঞানে তিনি হাসপাতালসহ সর্বত্র আমার বাসার ঠিকানাই ব্যবহার করেছেন। এমনকি তার মৃতুর আগে ও পরে বেলভিউ হাসপাতাল থেকে যে বিল এসেছিল তার অর্থ আমিই হুমায়ূন আহমেদের ডেথ সাটিফিকেটসহ জমা দিয়ে মওকুফ করার ব্যবস্থা করেছি। এসব কথা জানা থাকা সত্ত্বেও প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গেছেন শাওন!’

তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের মা আয়শা ফয়েজ জীবিত থাকাকালে মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ তার অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের উপস্থিতিতে তাদের মিরপুরের পল্লবীর বাসায় গিয়ে একটি ছাড়া হমায়ূনের আঁকা অন্য সবগুলো ‍চিত্রকর্ম তার কাছে হস্তান্তর করি। এজন্য শাওন আমার উপর ক্ষুব্ধ। সেটাই আমার অপরাধ।’

তিনি বলেন, ‘ আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, শাওনের হাতে না দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের চিত্র প্রদর্শনীর সব ছবি হুমায়ূনের পরিবারের সবার অভিভাবক হিসেবে তার মায়ের কাছে আমি নিজ হাতে হস্তান্তর করে এসেছি।’