জাতীয়

বাবার টাকায় আয়েশেই কাটছে ধর্ষক সাফাতের জেলজীবন

By Daily Satkhira

May 25, 2017

আলোচিত ধর্ষণ মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফ পাঁচ দিন ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন বেশ আয়েশেই। এরই মধ্যে স্বজনদের কেউ তাদের সঙ্গে দেখা করতে না গেলেও আরামে দিন যাপনে তাদের জন্য এক দিনেই ৭০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে।

নিরাপদ দূরত্বে থেকে সাফাতের বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ তার কারাবন্দি ছেলের হাতখরচের জন্য শনিবার এ টাকা প্রিজনার্স ক্যাশে (পিসি) জমা করে দেন লোকমারফত।

তবে দিলদার বা তার স্ত্রী কেউ ছেলেকে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখতে যাননি।

গত বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় ধর্ষণের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর দু’জনকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারাগারের ‘ভিআইপি’ সেল হিসেবে পরিচিত সূর্যমুখী সেলে দিন কাটছে তাদের। বাবার পাঠানো টাকা দিয়ে সাদমানকে নিয়ে সাফাত কারাগারের ভেতরে বেকারি ও রেষ্টুরেন্ট থেকে পছন্দমতো খাবার কিনে খাচ্ছেন।

কারাগারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  কারসূত্রে জানা গেছে, নতুন এ কারাগারের সূর্যমুখী সেলটি অন্যান্য সেলের চেয়ে ভালো। কারাগারের শেষ সীমানায় বিস্তীর্ণ মাঠের পাশের এ সেলে প্রচুর আলো-বাতাস রয়েছে।

সূত্র বলেছে, খাওয়া-দাওয়াও অন্যান্য সেল থেকে উন্নতমানের। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম সোমবার টেলিফোনে বলেন, সাফাত ও সাদমান দু’জনই সূর্যমুখী সেলের একটি কক্ষে রয়েছেন।

সেলটি ‘ভিআইপি’ বলে পরিচিত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারাগারে ‘ভিআইপি’ বলে কিছু নেই। কারাবিধান অনুযায়ী শুধু ডিভিশন পাওয়া আসামিরাই কিছু বাড়তি সুবিধা ভোগ করে থাকেন। এর বাইরে কারাগারে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে একই মামলায় গ্রেফতার অপর আসামি সাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ (প্রকৃত নাম আবদুল হালিম) সাত দিনের রিমান্ডে গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন। সোমবার ছিল তার রিমান্ডের ৫ম দিন। কথা হয় মামলার তদন্ত তদারককারী কর্মকর্তা ও ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়ের সঙ্গে।

তিনি বলেছেন, গ্রেফতার নাঈম আহমেদ ওরফে হালিমের কাছ থেকে এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে পুলিশ মোটামুটি সন্তুষ্ট। তার দেয়া তথ্য এখন যাচাই-বাছাই চলছে।

তিনি বলেন, আমরা এখন জব্দকৃত আলামতের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি। একই সঙ্গে ওই ধর্ষণের ঘটনায় সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের কাজ চলছে। ৫ আসামির সবাই ধর্ষণের ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। খুব শিগগিরই চার্জশিট তৈরির কাজে হাত দেবেন বলে জানান পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা। ২৮ মার্চ বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়ে ধর্ষিত হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। ঘটনার প্রায় ৪০ দিন পর ৬ মে ধর্ষিতা তরুণী মামলা করেন। এরপর ১১ মে সিলেট থেকে গ্রেফতার হন মূল হোতা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু সাদমান সাকিফ।

এর চার দিন পর ১৫ মে রাজধানীর নবাবপুর ও গুলশান-১ থেকে র‌্যাব এবং পুলিশের পৃথক অভিযানে গ্রেফতার হন অপর দুই আসামি সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল এবং বডিগার্ড রহমত ওরফে আবুল কালাম আজাদ। সর্বশেষ গত বুধবার রাতে মামলার দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফকে গ্রেফতার করা হয়।