জাতীয়

হেলেনা জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সেফুদার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল : র‌্যাব

By Daily Satkhira

July 30, 2021

দেশের খবর : উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মাধ্যমে সুনাম নষ্ট করেছে ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। এ ছাড়া খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন। একটি উচ্চাভিলাষী উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে নানা ধরনের অবৈধ পন্থা, অপকৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে শুক্রবার (৩০ জুলাই) উত্তরা র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অপকৌশল হিসেবে কখনও মাদার তেরেসা, পল্লী মাতা-প্রবাসী মাতা হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। জাহাঙ্গীর’র পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাতে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে নিজেকে বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতো সে।

আল মঈন বলেন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদা সঙ্গে ছিল হেলেনা জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিয়মিত যোগাযোগ এবং আর্থিক লেনদেন ছিল বলেও প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে র‌্যাব। আলোচিত সেফুদা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে নাতনী বলেও সম্বোধন করতো।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ উত্যক্ত করতো হেলেনা জাহাঙ্গীর। বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে গ্রেফতারকৃতের খেতাব প্রচার-প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। হেলেনা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তিনি ১২টি ক্লাবের সদস্যপদে রয়েছেন।

বিকালে র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে তারা গুলশান থানায় হস্তান্তর করছে।

আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে গত রোববার আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতি বহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

উপকমিটির সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের একদিন পরই ফেসবুক লাইভে এসে হেলেনা জাহাঙ্গীর কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

জয়যাত্রা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য হন গত ১৭ জানুয়ারি। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের দিকে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। আবদুল মতিন খসরু মারা গেলে ওই আসনে মনোনয়নের জন্য দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে মনোনয়ন পাননি।

সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।