বিদেশের খবর : চীনে বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যার কারণে প্রায় ৫০ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। গত মাসে ভারি বর্ষণের কারণে দেশটির মধ্যাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে এএফপি।
প্রাদেশিক সরকারের এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, হেনান প্রদেশের রাজধানী ঝেংঝৌয়ে বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করেছে। সেখানে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু ওই প্রদেশেরই ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৭ জন নিখোঁজ রয়েছে। সাবওয়ে ট্রেন, ভূগর্ভস্থ পার্কিং এবং টানেলে আটকা পড়েছেন লোকজন।
ঝেংঝৌয়ের মেয়র হোউ হং জানিয়েছেন, ভূগর্ভস্থ কার পার্কিং থেকে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে একটি টানেলে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই থেকেই ভারি বর্ষণ শুরু হয়। এতে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ভারি বৃষ্টি ও বন্যায় ৯ হাজার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া হেনান প্রদেশে প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ইউয়ান (৮.২ বিলিয়ন ডলার) আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে বন্যার মধ্যেই দেশটির পূর্ব উপকূলের ঝউশান শহরে আঘাত হানে শক্তিশালী টাইফুন ইন-ফা। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ আকার ধারণ করেছে।
অপরদিকে বন্যার খবর সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে গিয়ে বিদেশি সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। চীনের যে কোনও নেতিবাচক খবর প্রকাশ্যে আসার আগেই কণ্ঠরোধের বিষয়ে খুব সচেতন দেশটির সরকার। এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বন্যার ফুটেজ ডিলিট করতে তাদের সংবাদকর্মীদের বাধ্য করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে চীনের করোনা পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে লকডাউন জারি করা হয়েছে। সোমবার থেকে আবারও কয়েক লাখ মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘরে আটকা পড়লেন। গত কয়েক মাসের মধ্যে নতুন করে আবারও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং গণহারে লোকজনের করোনা পরীক্ষা করছে কর্তৃপক্ষ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই কঠোরভাবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে চীন। এ কাজে তারা বেশ সফলও হয়েছে।
কয়েক মাসের কঠোর প্রচেষ্টায় স্থানীয়ভাবে করোনা সংক্রমণ শূণ্যের কোঠায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয় বেইজিং। কিন্তু নতুন করে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় দেশটিতে আবারও উদ্বেগ বেড়ে গেছে। কারণ এখন পর্যন্ত পাওয়া করোনার বিভিন্ন ধরনের মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক ধরন হচ্ছে ডেল্টা।